প্রকাশিত: ১৭/০৯/২০১৯ ৭:৫৮ পিএম

ইমাম খাইর ::
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতিরেখে রোহিঙ্গা নাগরিকদের অবৈধ পন্থায় নানা কৌশলে ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক্স জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ভোটার নিবন্ধন করার অভিযোগে কক্সবাজারে ৬০০ জন রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শিমুল শর্মা বাদী হয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। থানা মামলা নং -৪১/১৯। জিআর-৯৯১/১৯।

মামলায় সুস্পষ্টভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে ৫ রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে। বাকি আসামিদের অজ্ঞাতনামা তালিকায় রাখা হয়েছে।

এজাহারনামীয় আসামিরা হচ্ছেন- কক্সবাজার পৌরসভার পশ্চিম নতুন বাহারছড়ার বাসিন্দা ইউসুফ আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম নুরু (৪২), মৃত শহর মুল্লুকের ছেলে ইয়াসিন (৩৭), টেকনাফ নয়াপাড়া মুছনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ ব্লকের আবুল হাশেমের ছেলে আব্দুল্লাহ (৫৩), ওবায়দুল্লাহ (৩৭) ও কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদ খোদাইবাড়ি এলাকার মৃত ওলা মিয়ার ছেলে শামসুর রহমান (৫০)। তথ্যগুলো দিয়েছেন নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী মাহবুব আলম।

মামলার বাদি শিমুল শর্মা জানান, অভিযুক্তরা চট্টগ্রাম শহরের অজ্ঞাতনামা লোকজনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা নাগরিকদের অবৈধ পন্থায় নানা কৌশলে ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক্স জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ভোটার নিবন্ধন করে আসছে।

সম্প্রতি বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্রে প্রতারকচক্রের অপরাধের বিষয়ে জানতে পারে নির্বাচন কমিশন। বেশ কিছু লোকজনের তথ্যও নির্বাচন কমিশনের হাতে পৌঁছেছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েকজনকে।

শিমুল শর্মা আরো জানান, ইতোমধ্যে নুরুল ইসলাম প্রকাশ নুরু ও মোঃ ইয়াসিন টাকার বিনিময়ে ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছেন। যা স্পষ্ট হওয়ার পরে তারাসহ আরেক রোহিঙ্গা আব্দুল্লাহকে আটক করা হয়।

SUGGESTED NEWSMgid

15 Reasons That Explore The Enormous Benefits Of Dental Implants
Viral Stories
আটককৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, গত ১২ মে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নুরু ও মোঃ ইয়াসিন শহরের নতুন বাহারছড়া জামে মসজিদের সামনে আব্দুল্লাহ, ওবায়দুল্লাহ ও শামসুর রহমানকে ভোটার নিবন্ধনের জন্য ১৫,০০০ টাকা প্রদান করেন। অতঃপর তাদের ফটো তুলে ভোটার নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে একটি কক্ষে রাখে। যেখানে পূর্ব থেকেই আরো অনেক রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

নুরু, মোঃ ইয়াসিন ও আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো স্বীকার করেছে, তারা প্রত্যেকেই টাকা দিয়ে ভোটার হয়েছে।
নির্বাচন অফিসার জানিয়েছেন, প্রতারক-জালিয়াতচক্র কম্পিউটার, ডিজিটাল ইলেকট্রনিকসহ বিভিন্ন ডিজিটাল সিস্টেমে রোহিঙ্গাদের নাম ঠিকানা এন্ট্রি করে বায়োমেট্রিক ডাটা নিয়ে চক্রটি অনধিকারে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অনুমতি বিহীন কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেম, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে । ডিভাইসের ইনপুট-আউটপুট প্রস্তুতপূর্বক অন্তত ৬০০ রোহিঙ্গা নাগরিকের তথ্য অবৈধভাবে নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেসে সংযুক্ত ও কক্সবাজার সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নিবন্ধনভূক্ত করে দেয়।

নির্বাচন অফিসের সার্ভারের অনলাইন ডাটাবেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আটক হওয়া রোহিঙ্গাদের নাম-ঠিকানা নির্বাচন কমিশনের ভোটার নিবন্ধন তথ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকলেও কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের ভোটার নিবন্ধন ল্যাপটপ আইডির সাথে মিল নাই।
নির্বাচন কমিশন ধারণা করছে, রোহিঙ্গারা চিহ্নিত ও সংঘবদ্ধ একটি চক্রের সাথে হাত করে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ভোটার তালিকাভুক্ত হচ্ছে। ইতিমধ্যে অন্তত ৬০০ জন রোহিঙ্গা অবৈধ পন্থায় ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছে। যা ভোটার তালিকা আইন -২০০৯ এর ১৮/১৯ সুস্পষ্ট লংঘন।

উল্লেখ্য, এজাহার অভিযুক্ত শামসুর রহমান ২০১৭ সালের ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমে প্রতারণামূলকভাবে সিল-স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ভোটার করতে সহযোগিতা করায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করা হয়। যার মামলা নং-৩৩। তারিখঃ ১৩/০৩/২০১৮ ইং।

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...

ইসলামপুরে আটক রোহিঙ্গা যুবককে কুতুপালং ক্যাম্পে হস্তান্তর

জামালপুরের ইসলামপুরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার মো. রোবেল (২২) নামের সেই রোহিঙ্গা যুবককে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ের ট্রানজিট ...