প্রকাশিত: ১৩/০৯/২০১৯ ২:৫৮ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
রোহিঙ্গা, সাজাপ্রাপ্ত ও ফেরারি আসামি, দাগি অপরাধীদের জন্ম নিবন্ধন সনদ সরবরাহ করছে একটি চক্র। ওই সনদ প্রথমে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সার্ভারে সংযুক্ত করত চক্রটি। এনআইডি হলে পাসপোর্টও মিলছে সহজেই। শক্তিশালী এই চক্রে রয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এই অপকর্ম করে তারা হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা। র‌্যাব ইতোমধ্যে এই চক্রের ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে দুজন সরকারি কর্মচারী। চক্রের কাছ থেকে প্রায় ২৫ হাজার বৈধ জন্ম সনদ উদ্ধার করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় সার্ভারে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অবাধ অ্যাকসেস (প্রবেশাধিকার) থাকায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। তারা টাকার বিনিময়ে এর ভয়াবহ অপব্যবহার করছেন। যেটি জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে সরকারের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে জাতীয় সার্ভারে অ্যাকসেস নিশ্চিত করার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

র‌্যাব জানায়, ৫ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই সনদ দেয় চক্রের সদস্যরা। সিটি করপোরেশন ও দেশের বিভিন্ন জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে রোহিঙ্গা ও অপরাধীদের বয়স কম-বেশি দেখিয়ে জন্ম সনদ তৈরি করে দেয় চক্রের সদস্যরা। জন্ম সনদ নেওয়া সবারই টার্গেট থাকে পাসপার্ট বানিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো। জন্ম সনদ নিয়ে তারা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে জন্ম সনদের তথ্য ভা-ারে থাকা তথ্যের মিল পেয়ে পাসপোর্ট প্রদান করা হতো। সাজাপ্রাপ্ত আসামি তার নাম, বাবার নাম, বয়স, ঠিকানা পরিবর্তন করে পাসপোর্ট করলে তাদের বিমানবন্দরে আটকানো যায় না। এই সুযোগটি কাজে লাগাত চক্রটি।

গত বুধবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের পাশের দোকানে অভিযান চালিয়ে চক্রটির ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-২। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চক্রটি প্রায় দুই বছর ধরে এই অপকর্ম করে আসছে। তাদের মধ্যে দুজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অফিস সহকারী মাঈন উদ্দিন ও নেত্রকোনার একটি পৌরসভার উদ্যোক্তা সদস্য মামুন মিয়া। জাতীয় পরিচয়পত্র সার্ভারে এসব সনদ সংযুক্ত করতেন এই দুই সরকারি কর্মচারী। তারা রোহিঙ্গাদের জন্ম সনদ তৈরি করে পাসপোর্ট করে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন র‌্যাবের কাছে।

চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া র‌্যাব ২-এর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী আমাদের সময়কে বলেন, কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র ছাড়া জন্ম সনদ প্রদান বন্ধ করার বিষয়ে জোরালোভাবে ভাবার সময় এসেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই চক্রে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও উদ্যোক্তা সদস্য, সিটি করপোরেশনের নিবন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা পরিষদ ও বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের জন্ম-মৃত্যু রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ের কর্মচারীরা জড়িত।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, অবৈধভাবে জন্ম সনদ এবং পাসপোর্ট প্রদান চক্রের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়োগ, পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেও উত্তীর্ণ!

কক্সবাজারে স্বাস্থ্য সহকারীসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষাকে ঘিরে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা ...

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে ৮.৮ ডিগ্রি, টেকনাফে সর্বোচ্চ ৩১

শীতের তীব্রতা বাড়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে দেশের ...

১৩ রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি, ইউপি উদ্যোক্তার স্বামী কারাগারে

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভুয়া সিল–স্বাক্ষর ব্যবহার করে ১৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিকের জন্মনিবন্ধন তৈরির ...