প্রকাশিত: ১৪/০৫/২০১৯ ৭:৫২ পিএম

মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সব ধরনের আর্থিক সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানিয়েছে দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘ মিশন। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার কোনও ভূমিকাই পালন করেনি।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। জাতিগত নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতায় জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১০ লাখে।

জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসম্যান জানায়, ‘পরিস্থিতি আগের মতোই আছে।’ জাতিসংঘ মিশনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যে সামরিক বাহিনী সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় চাপিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ওপর।

এক বিবৃতিতে মিশনের সদস্য ক্রিস্টোফার সিদোতি বলেন, ‘অতীত থেকে এখনও চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। কে এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত তা চিহ্নিত করে তাদের অর্থপ্রবাহ বিচ্ছিন্ন করতে চাই আমরা। যেন তাদের ওপর চাপ তৈরি হয় এবং সহিংসতা কমে যায়।

মিয়ানমারের দাবি, তারা কোনও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেনি। তাদের নিরাপত্তা বাহিনী বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেনি বরং সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের হামলার জবাব দিয়েছে।

জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থা বর্মি বাহিনীর এই সামরিক অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ ও গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার নামে মানবাধিকার পরিষদের নতুন গ্রুপের কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন তুলে দেবে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়া স্থাপনে এই গ্রুপটি তৈরি করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও তিক্ত সম্পর্ক তৈরি হয়েছে মিয়ানমারের। তাদের ওপর আবারও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়। এছাড়া রাখাইন অভিযানে জড়িত সামরিক সদস্যদের সব ধরনের মার্কিন সহায়তা থেকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিছু সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে ব্রিটেনও। জাতিসংঘসহ অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠন আহ্বান জানিয়েছে যেন অন্যান্য দেশও সামরিক বাহিনীকে দায়ী করে ব্যবস্থা নেয়।

পাঠকের মতামত

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ‘সুখবর’ দিল মালয়েশিয়া সরকার

মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন ...

ভারতে আশ্রিত আওয়ামী নেতাদের নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন মমতা, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়ার হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ...

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন করছে আরাকান আর্মি: এইচআরডব্লিউ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর দমনমূলক নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে জাতিগত ...

রয়টার্সের প্রতিবেদনমিয়ানমারের বিরল খনিজে নজর যুক্তরাষ্ট্রের, বিদ্রোহীদের পক্ষে টানছে ট্রাম্প প্রশাসন

মিয়ানমারের বিরল খনিজ সম্পদের দিকে চোখ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মিয়ানমারের বিরল খনিজে চীনের কর্তৃত্ব সরিয়ে নিতে ...

মিয়ানমার জান্তা ঘনিষ্ঠদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

মিয়ানমারের সামরিক জান্তাঘনিষ্ঠ চার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অর্থ ...