প্রকাশিত: ১৯/০৭/২০২২ ৯:২৮ এএম


রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় দিন দিন বাড়ছে রোহিঙ্গার সংখ্যা। গত পাঁচ বছরে রোহিঙ্গা পরিবারগুলোয় দেড় লাখের বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে।

নতুন জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের কাছে না থাকলেও সংশ্লিষ্টদের মতে, বছরে কমবেশি ৩০ হাজার শিশুর জন্ম হচ্ছে ক্যাম্পগুলোয়। বেসরকারি এনজিও সেভ দ্য চিলড্রেনের পক্ষ থেকেও শিশু জন্মহারের প্রায় অভিন্ন তথ্য জানানো হচ্ছে।

পরিবারগুলোয় বাল্যবিয়ে ও পুরুষের একাধিক বিয়ের প্রবণতার ফলে দিন দিন বাড়ছে রোহিঙ্গা জনসংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় জোরদার হচ্ছে জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বা পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম। পাশাপাশি রোহিঙ্গা নবজাতকদের নিবন্ধনের আওতায় আনারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরসি) অতিরিক্ত সচিব শাহ রেজোয়ান হায়াত গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ভাসানচরসহ উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ শিবিরে নতুন-পুরান মিলে জাতিসংঘের হিসাবমতে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার নিবন্ধন রয়েছে।

এ ক্যাম্পগুলোয় বছরে গড়ে কমবেশি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করছে। সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও এ সংখ্যার বিষয়ে প্রায় সবাই একমত। সে হিসেবে গত পাঁচ বছরে দেড় লাখের বেশি রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে। এসব শিশু নিবন্ধনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এজন্য জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। মূলত তাদের মাধ্যমেই এ নিবন্ধনের কাজ করা হবে। ’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন আরআরসির তথ্যানুযায়ী, উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ আশ্রয় শিবিরে লাখ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস। জাতিসংঘের হিসাবে এ সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ, ইউএনএইচসিআরের পরিসংখ্যানে ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৪। অন্যদিকে, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের নিবন্ধন অনুসারে, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৮৬।

এ দলটি আসার আগে এসেছে আরও অনেক রোহিঙ্গা। তাদের প্রত্যাবাসনও শুরু হয়েছিল।
কিন্তু ১৯৯২ সালে প্রত্যাবাসন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর উখিয়া-টেকনাফের দুটি রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গার সরকারি পরিসংখ্যান দাঁড়ায় প্রায় ৩২ হাজার। গত ২৫ বছরে ওই ৩২ হাজারের সঙ্গে নতুন ভূমিষ্ঠ শিশু যুক্ত হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। এরা শিশু থেকে কৈশোর, কৈশোর থেকে যৌবন পেরিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নতুন পরিবার গড়ে তুলেছে এবং সে পরিবারগুলোয়ও এসেছে অসংখ্য শিশু। জানা গেছে, অধিকাংশ পুরুষ রোহিঙ্গার একাধিক স্ত্রী রয়েছে। প্রতি স্ত্রীর ঘরে আসছে নতুন শিশু। রোহিঙ্গারা মনে করে মিয়ানমারের এ ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা যতই বাড়বে ততই তাদের লাভ। সে অনুযায়ী ধীরে ধীরে এ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। ২০১৭ সালের পর ১০ থেকে ১২ বছরের যেসব শিশু ও কিশোরী কেউ একা বা পরিবারের সঙ্গে পালিয়ে এসেছিল এদের অনেকেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। অনেকেই এখন একাধিক সন্তানের জননী। উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ শিবিরের ঝুপড়ি, কক্ষ, টাল (বস্তি) ইত্যাদিতে প্রতিনিয়ত ভূমিষ্ঠ হচ্ছে শিশু। বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭ সালের পর থেকে হালনাগাদ অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে ৩৪ শিবিরে জন্ম নিয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা শিশু। নতুন-পুরান নিয়ে এ দেশে জন্ম নেওয়া শিশুসহ রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। শিশুদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিসংখ্যান ও কর্মকর্তাদের মতে, ৩৪ রোহিঙ্গা শিবিরে গড়ে প্রতিদিন ৯০ শিশু জন্ম নিচ্ছে। সে অনুযায়ী ভূমিষ্ঠ হচ্ছে গড়ে ২ হাজার ৭০০ শিশু। বছর এ সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩২ হাজার ৪০০। এ গড়সংখ্যা মিলিয়ে ২০১৭ সালের পর এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিশু ভূমিষ্ঠ হয়েছে দেড় লাখের ওপরে। এর সঙ্গে এক দিন পার হলেই নতুন যোগ হচ্ছে আরও ৯০ জন। এদিকে কক্সবাজারের উখিয়ায় ইউএনএইচসিআরের অর্থায়নে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। ৩০ জুন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। সেখানে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্মহার নিয়ন্ত্রণে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে ত্রাণসচিব কামরুল হাসান বলেন, ‘আমাদের হিসাবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতি বছর কমবেশি ৩৫ হাজারের মতো নতুন শিশু জন্ম নেয়। সেখানে আমাদের দেশে প্রচলিত পরিবার পরিকল্পনা সেবা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের কিছুটা ধর্মীয় অনুভূতি আছে, তারা এটা করতে চায় না। রোহিঙ্গাদের মোটিভেট করে, তাদের বুঝিয়ে এ কাজে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সুত্র: বিডি প্রতিদিন

পাঠকের মতামত

পুলিশ থেকে বাঁচতে জীবনটাই দিলেন সিএনজিচালক

গ্রামের চন্দনাইশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে ...

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চলন্ত সিএনজিতে সিলিন্ডার বি’স্ফোরণ, চালক নিহত

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চন্দনাইশ এলাকায় চলন্ত সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুনে দগ্ধ হয়ে ...