উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে বড় মেরিন ড্রাইভের উদ্বোধন করে বলেছেন, কক্সবাজার হবে উন্নত একটি জেলা, উন্নত পর্যটন, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন হয়ে গেছে। এখন কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কও চার লেন হবে অতি দ্রুত।
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বোয়িং চলাচলের উপযোগী হয়েছে, এখানে প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে সরাসরি ফ্লাইট আসবে বলেও তিনি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।
শনিবার (০৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার উখিয়া উপজেলায় ইনানী বিচে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মেরিন ড্রাইভ তৈরি করতে গিয়ে যাদের ঘরবাড়ি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীর ওইপারে তাদের জন্য আলাদা বাড়ি করে দেওয়া হচ্ছে। তারা মূলত শুটকি ব্যবসায়ী; তাদের জন্য শুটকি শুকানোর পৃথক জায়গাও করে দেওয়া হচ্ছে।
যারা জায়গা দিয়েছেন তারা অর্থ অতি দ্রুতই পেয়ে যাবেন বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা, কক্সবাজার হবে নতুন অঞ্চল, টার্মিনাল হবে। এটি পর্যটন কেন্দ্রই শুধু নয়, খেলাধুলার কেন্দ্র। আন্তর্জাতিক খেলা হবে এখানে, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ফুটবল খেলার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
মেরিন ড্রাইভ তৈরির সময় পাহাড় ধসে দুর্যোগে ছয়জন সেনাবাহিনীর সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের গভীরভাবে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী, তিনি আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
ইনানীতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বাস্তবায়িত (সম্প্রতি সমাপ্ত) কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের যাত্রা শুরু হলো। প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কে এম মেহেদী হাসান জানান, এটি বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ (সাগরপারের সড়ক), যেটির দৈর্ঘ্য ৮০ কিলোমিটার।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় তিনি কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত রানওয়েতে ৭৩৭-৮০০ বোয়িং বিমান চলাচল উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী ৭৩৭-৮০০ বোয়িং বিমান মেঘদূতে করে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে আসেন।
দুপুর ২টা থেকে পৌনে ৩টার মধ্যে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ছাত্রী নিবাস, কক্সবাজার সরকারি কলেজের একাডেমিক ভবন কাম এক্সামিনেশন হল, কক্সবাজারের উখিয়ায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের দ্বিতল একাডেমিক ভবন এবং মহেশখালী-আনোয়ারা গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন উদ্বোধন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) এলজিইডি অংশের আওতায় কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলাধীন বাকখালী নদীর উপর খুরুস্কুল ঘাটে ৫৯৫ মিটার দৈর্ঘ্যের পিসি বক্সগার্ডার ব্রিজ, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কক্সবাজার আইটি পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
এক্সিলাটে এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃক নির্মিতব্য মহেশখালী ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল, সামিট এলএনজি টার্মিনাল কো. (প্রা.) লি. কর্তৃক নির্মিতব্য মহেশখালীতে দ্বিতীয় ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল, মহেশখালী উপজেলায় এসপিএম (ইনস্টলেশন অব সিংগেল পয়েন্ট মুরিং) প্রকল্প, নাফ ট্যুরিজম পার্ক, কুতুবদিয়া কলেজের একাডেমিক ভবন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অফিস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী বিকেলে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেবেন।
একই দিন বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে আকাশ পথে কক্সবাজার ছাড়ার কথা রয়েছে তার।