ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১১/০৫/২০২৩ ২:৪৯ পিএম

আগামী সেপ্টেম্বরে কক্সবাজারে চালু হচ্ছে দেশের প্রথম বিশ্বমানের অত্যাধুনিক ঝিনুক আকৃতির ‘আইকনিক রেলস্টেশন’। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর এ রেলস্টেশনটি এখন অনেকটা দৃশ্যমান, চলছে সৌন্দর্যবর্ধনসহ অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা।

এ যেন বিশাল আকৃতির এক ঝিনুক। পেটে মুক্তার দানা। তার চারপাশে পড়ছে স্বচ্ছ জলরাশি। এর মধ্যেই আসবে ট্রেন, ঝকঝকে আধুনিক এ স্টেশন অনেকটাই উন্নত বিশ্বের বিমানবন্দরের মতো। দেশের প্রথম এই আইকনিক রেলস্টেশনের নির্মাণকাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার সদরে ঝিংলজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়ায় নির্মাণাধীন ঝিনুক আকৃতির এ আইকনিক রেলস্টেশনটি দৃশ্যমান হয়েছে। কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। স্টেশনটি দেখতে ঠিক বিশাল আকৃতির একটি ঝিনুকের মতো। এখন চলছে অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা। বড় আকৃতির ক্রেন, নির্মাণ সামগ্রীর ভারি যানবাহন ও শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততায় দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে নির্মাণকাজ। এর মধ্যে এই স্টেশন দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন মানুষ। সংশ্লিষ্টরা বলছে, আগামী সেপ্টেম্বরে চালু হচ্ছে দেশের প্রথম বিশ্বমানের অত্যাধুনিক ঝিনুক আকৃতির ‘আইকনিক রেলস্টেশন’।

এই স্টেশন দেখতে যাওয়া স্থানীয় যুবক সাজ্জাদ জানান, এমন সুন্দর স্টেশন আগে কোথাও দেখেনি। আমি দুবাই গিয়েছিলাম। দুবাই বিমানবন্দরগুলো ঠিক দেখতে এই স্টেশনের মতো। সত্যি বলতে এই স্টেশন প্রথম দেখাতে সবাইকে মুগ্ধ করবে। টেলিভিশনে এই স্টেশনের ভিত্তি যেরকম দেখেছিলাম বাস্তবে আরও সুন্দর। এটি কক্সবাজারের জন্য বিশাল একটি অর্জন।

সাগর নামে আরেক স্থানীয় যুবক জানান, এটি কক্সবাজারের জন্য বিশাল মাইলফলক। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের জন্য পরিচিত হলেও এবার থেকে এই আইকনিক স্টেশনের জন্য পরিচিতি লাভ করবে। বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে এই আইকনিক রেলস্টেশন।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, কক্সবাজার পর্যটক টানতে আইকনিক রেলস্টেশন ভূমিকা রাখবে। উন্নত বিশ্বে গিয়ে যে সুযোগ-সুবিধা রেলস্টেশনে পাওয়া যায়, তার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে ভ্রমণপিপাসুরা পাবেন। তাই এই ধরনের স্থাপত্যশৈলী কক্সবাজারে নির্মাণ করা যোগাযোগ ব্যবস্থায় সরকারের একটি অসাধারণ অর্জন।

স্টেশনটির স্থপতি মো. ফয়েজ উল্লাহ বলেন, এই স্টেশনের বিশেষত্ব হচ্ছে দিনের বেলায় আলোর জন্য বিদ্যুৎ খরচ করতে হবে না। ওপরের ছাদ খোলা থাকায় থাকবে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। ঝিনুক ও শামুকের গঠনটা যেমন থাকে, আর বাকি শরীরের অংশটুকু ভেতরে আবৃত থাকে। কক্সবাজার রেলস্টেশন ডিজাইন করার সময় আমরা সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা নিয়ে পুরো রেলস্টেশনটাকে একটা ছাউনি দিয়ে ঢেকে দিয়েছি। স্টেশনের কাজ প্রায় শেষ প্রান্তে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সেপ্টেম্বরে চালু হতে পারে।

আইকনিক স্টেশন ভবনের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার তাইজুল ইসলাম বলেন, স্টেশনটির মূল আকর্ষণ দেশের প্রথম আইকনিক রেলস্টেশন। এ যেন বিশাল আকৃতির একটি ঝিনুক! ঝিনুকের পেটে মুক্তার দানা! তার চারপাশে পড়ছে স্বচ্ছ জলরাশি! ঝিনুকের ফোয়ারা। এরই মধ্যে এ ফোয়ারার কাজ চলমান রয়েছে। আশা করি, আগামী এক মাসের মধ্যে ঝিনুকের ফোয়ারার কাজ শেষ হবে।

এই স্টেশনে সবধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন পর্যটকরা। এখানে বৃষ্টির পানি থেকে শুরু করে পানি পুনর্ব্যবহার করা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া পুনর্ব্যবহৃত টেকসই উপাদান ব্যবহার করছি। পানির অপচয় রোধে ওয়াটার ফিক্সচার ব্যবহার করছি। নানা রকম সুযোগ-সুবিধা আছে এখানে। বলা যায়, এ বিল্ডিংটা একটা পরিপূর্ণ গ্রিন বিল্ডিং।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইমরান শাহীন বলেন, আইকনিক রেলস্টেশন দেশের পর্যটকখ্যাতে ভূমিকা রাখবে। উন্নত বিশ্বে গিয়ে যে সুযোগ-সুবিধা রেলস্টেশনে পাওয়া যায়, তার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে ভ্রমণপিপাসুরা পাবেন। এই আইকনিক স্টেশনের বিশেষত্ব হচ্ছে বৃষ্টির পানি থেকে শুরু করে পানি পুনর্ব্যবহার করা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া পুনর্ব্যবহৃত টেকসই উপাদান ব্যবহার। পানির অপচয় রোধে ওয়াটার ফিক্সচার ব্যবহার । নানা রকম সুযোগ-সুবিধা আছে এখানে। বলা যায়, এ বিল্ডিংটা একটা পরিপূর্ণ গ্রিন বিল্ডিং। আমরা আশাবাদী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরে কাজ শেষ করে চালু করতে পারব।

উল্লেখ্য ২০১৮ সালের জুলাইয়ে এই মেগা প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ঊনত্রিশ একর জমির ওপর ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এক লাখ ৮৭ হাজার ৩৭ বর্গফুটের আইকনিক স্টেশন ভবন। আর স্টেশন ভবনের পশ্চিম পাশে একসঙ্গে নির্মিত হয়েছে পাঁচতলা ২০টি ভবন। সুত্র: ঢাকাপোষ্ট

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা শিবিরে ইফতার যে রকম

আব্দুল কুদ্দুস,প্রথমআলো রোববার বিকেল চারটা। কক্সবাজারের উখিয়ার প্রধান সড়ক থেকে বালুখালী আশ্রয়শিবিরে ঢোকার রাস্তায় দেখা ...