বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৮/১১/২০২২ ৯:৩৯ এএম
স্কুল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সেন্ট মার্টিনে স্কুলছাত্রীকে (১৩) ছুরিকাঘাত করা সেই বখাটে শহীদুল ইসলাম ওরফে জুয়েলকে (১৯) পুলিশে সোপর্দ করেছেন তাঁর বাবা ফিরোজ আহমদ। ফিরোজ আহমদ কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ছেলেকে সেন্ট মার্টিন ফাঁড়ির পুলিশ সদ্যদের হাতে তুলে দেন তিনি।

পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আজ দুপুরে স্কুলছাত্রীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনার পর তাঁরা অভিযুক্ত শহীদুলের বাড়িতে যান। সেখানে তাঁকে না পেয়ে তাঁর বাবা ফিরোজ আহমদকে ঘটনা জানান। ফিরোজ আহমদ তখন বলেন, তাঁর ছেলে বাসায় ফিরলে তিনি নিজে পুলিশ ডেকে তাঁকে তুলে দেবেন। রাতে শহীদুল বাসায় ফিরলে ফিরোজ আহমদ পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। পুলিশ গেলে শহীদুলকে সোপর্দ করেন তাঁর বাবা।

পরিদর্শক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য জানান, শহীদুল তাঁদের হেফাজতে আছেন। এ ঘটনায় মামলা হলে তখন পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা।

পুলিশ ও আহত স্কুলছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সেন্ট মার্টিন বিএন ইসলামিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ছুরি মেরে আহত করেছেন শহীদুল। আজ দুপুরে টিফিনের বিরতিতে স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জেলা পরিষদের ডাকবাংলো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত স্কুলছাত্রীর চাচা বলেন, স্থানীয় লোকজন তাঁর ভাতিজিকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। বর্তমানে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় শহীদুল ওই ছাত্রীর পথ আটকান। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান শহীদুল।

আহত স্কুলছাত্রীর অভিযোগ, শহীদুল তিন-চার মাস ধরে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। বিষয়টি বিদ্যালয়ের সভাপতিকে জানানো হয়েছিল। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান কিছুদিন আগে দুই পরিবারকে ডেকে বৈঠক করেন। শহীদুলকে বকাঝকা করা হয়। আজ দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় জেলা পরিষদের ডাকবাংলো এলাকায় শহীদুল তার পথ আটকান। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান শহীদুল।

ঘটনার পর স্কুলের শিক্ষার্থীরা পুরো এলাকায় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এতে সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকেরা ভোগান্তিতে পড়েন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের বোঝায়। পরে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাফিজা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, আহত স্কুলছাত্রীর বাঁ হাতের কবজিতে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ছাত্রীর অভিভাবকের অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েক মাস আগে পুলিশ ফাঁড়িতে বসে বিষয়টির মীমাংসা করে দেওয়া হয়। তারপরও ছেলেটি এমন ঘটনা ঘটাল।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে সংঘাত/টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল আরও ৯ বিজিপি সদস্য

মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ...