উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১/০২/২০২৩ ৯:১৪ এএম

নুপা আলম ::
কক্সবাজারের টেকনাফের দমদমিয়া জেটি থেকে যাত্রা দিলে পর্যটনবাহি জাহাজ সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেটিতে পৌঁছে যাবে আড়াই ঘন্টার মধ্যে। নাফ নদী, গাঙচিল, মিয়ানমারের সীমানা ঘেঁষে সাগর আর প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ শেষে দেশের সর্ব দক্ষিণের প্রবাল দ্বীপটিতে নেমে প্রথম বিরক্তের কারণ হতে পারে ইজিবাইক ও ভ্যান। সড়কের পাশে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে থাকা এসব যানের ভাড়া শুনলেই বিস্মিত হয়ে যান পর্যটকরা।

মাত্র ৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটির প্রস্থ আধা কিলোমিটার। এ দূরত্বের পূর্বের জেটি ঘাট থেকে পশ্চিমের শেষে অবস্থিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সমুদ্র বিলাসে হেঁটে গেলে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট। কিন্তু ৩ জন বহন যোগ্য ইজিবাইক ভাড়া কমপক্ষে ৩০০ টাকা। দর দাম করার সুযোগও পাওয়া যাবে না। কেননা এসব ইজিবাহক চালক পর্যটকদের সাথে দরদাম করতে পছন্দ করেন না।
যদিও দ্বীপটির ইজিবাইক ও ভ্যান মালিক সমিতির প্রদর্শিত তালিকা মতে, এই আধা কিলোমিটার দূরত্বের ইজিবাইক ভাড়া ২০০ টাকা।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকালে কথা হয় দ্বীপে ভ্রমণে আসা পর্যটক আদিত্য অঞ্জনের সাথে। তিনি জানান, দ্বীপটিতে ইজিবাইক বা ভ্যান ভাড়া খুব অস্বাভাবিক। দাবি করা ভাড়া না দিলে কোনভাবেই যাত্রী উঠানো হয় না। দ্বীপ ভ্রমণে আসা পর্যটকরা নতুন এসে স্থান বা হোটেল চিনতে পারেন না। বাধ্য হয়ে ভাড়ায় উঠে গন্তব্যে পৌঁছেন ৪-৫ মিনিটে। আর ভাড়া নেন কয়েক শত। এ ক্ষেত্রে ইজিবাইক ও ভ্যান মালিক সমিতির প্রদর্শিত তালিকার মূল্যও অনেক বেশি। কিন্তু এই তালিকাও মানেন না কোন চালক। আদায় করেন আরও বেশি।

এর কারণ হিসেবে আবদুল করিম নামের এক চালক জানালেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, বর্তমানে দ্বীপটিতে ৩ শত ইজিবাইক ও ভ্যান আছে। এসব যান বিদ্যুৎ চালিত। দ্বীপে বিদ্যুতের মূল্য খুব বেশি। সাথে যুক্ত আছে ইজিবাইক ভাড়াও।
কেবল পর্যটকের উপর তাদের আয় নির্ভর। ইজিবাইক ও ভ্যান মালিক সমিতির প্রদর্শিত যে তালিকা তা আগে বিদ্যুৎ মূল্য নিয়ে তৈরী করা। ফলে এর অতিরিক্ত টাকা তাদের নিতে হয়।
রফিকুল ইসলাম নামের অপর এক ইজিবাইক চালক জানান, ইজিবাইক ভাড়া প্রতিদিন ৬০০ টাকা আর বিদ্যুৎ চার্জ ৪০০ টাকা। ১ হাজার টাকা পাওয়ার পরই তাদের আয় শুরু। পর্যটক ছাড়া আর কোন যাত্রী নেই। ফলে ভাড়া তাদের একটু বেশি নিতে হয়।
আবদুল গনি নামের এক ব্যবসায়ী জানান, পুরো দ্বীপের বিদ্যুৎ সরবরাহ করেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্লু মেরিন এনার্জি। সোলার প্যানেল ও জেনারেটরের মধ্য দেয়া বিদ্যুৎ প্রতি ইউনিটের মূল্য ৫৮ টাকা। যদিও গত ২ বছর আগে এ বিদ্যুৎ প্রতি ইউনিটে নেয়া হতো ৩২ টাকা। দুই দফা বাড়িয়ে এখন নেয়া হচ্ছে ৫৮ টাকা।
দ্বীপের মাঝামাঝি অবস্থিত ব্লু মেরিন এনার্জি কার্যালয়ে গিয়ে দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। মালেক পরিচয় দেয়া এক কর্মচারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা দায়িত্বশীলের ফোন নম্বর দিতেও রাজী নন। তবে তিনি জানান, তাদের সোলার প্যানেল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ আছে। মুলত জেনেরেটর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। দ্বীপে তেল আনতে অতিরিক্ত খরচ রয়েছে।
এই অতিরিক্ত খরচের বিষয়টি সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। দ্বীপে সব কিছুর মূল্য স্বাভাবিক না। এর কারণ হিসেবে ওই ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বার) খোরশেদ আলম জানান, দ্বীপে পণ্য আনতে হচ্ছে টেকনাফ থেকে। আনার ক্ষেত্রে জেটি টোল, সরকারি টোল, শ্রমিক ও পরিবহন খরচ যোগ করলে পণ্যের মূল্য বেড়ে যায়।
এক্ষেত্রে মূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্যও নেই দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের। চেয়ারম্যান দ্বীপটিতে কত ইজিবাইক ও ভ্যান আছে তার সংখ্যাও জানেন না।

পাঠকের মতামত

উখিয়ার থাইংখালীর আলাউদ্দিন ও ছাত্তার সিন্ডিকেটের মাটিভর্তি ডাম্পার জব্দ

উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী গৌজঘোনা এলাকায় রাতের আঁধারে পাহাড় সাবাড় করছে মো. আলাউদ্দিন ও ...