প্রকাশিত: ২১/০১/২০২২ ৩:৪৬ পিএম

সুজাউদ্দিন রুবেল::
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পে চলছে সন্ত্রাস বিরোধী সাঁড়াশি অভিযান।

গেল সাড়ে ৩ মাসে আরসা প্রধানের ভাই শাহ আলীসহ নানা অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছে সহস্রাধিকের বেশি অপরাধী। নির্মিত হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার; চলছে ড্রোন দিয়ে পর্যবেক্ষণ।

সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছে, সাঁড়াশি অভিযানের ফলে অপরাধ প্রবণতা কমে আসার পাশাপাশি ক্যাম্পে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে।

এদিকে ক্যাম্পকে নিরাপদ করতে দিনরাত্রি সমানভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএন।

উখিয়ার কুতুপালংস্থ ক্যাম্প ১৭; সংবাদ ছিল এই ক্যাম্পের ইরানি পাহাড়ে অপরাধীরা অবস্থান করছে। সঙ্গে সঙ্গে এ দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ছুটে যান এপিবিএন সদস্যরা। ঘিরে ফেলা হয় পুরো পাহাড়টি। শুরু হয় অভিযান, চলে ঘরে ঘরে তল্লাশি। পুরুষের পাশাপাশি ছিলেন এপিবিএনের নারী সদস্যরাও।

দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরও পাওয়া যায়নি কোনো অপরাধীকে। এরপর শুরু ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ। দুর্গম এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড় চলে ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ। এভাবে প্রতিদিনই ক্যাম্পগুলোতে চলছে সন্ত্রাসবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান। গেল রোববারও (১৬ জানুয়ারি) ড্রোনের মাধ্যমে দুষ্কৃতিকারীদের অবস্থান শনাক্ত করে অস্ত্র ও মাদকসহ আটক করা হয় আরসা প্রধানের ভাই শাহ আলীকে।

২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়ার লম্বাশিয়া ক্যাম্পে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ। এরপর থেকে সাঁড়াশি অভিযানে ক্যাম্পে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে বলে দাবি সাধারণ রোহিঙ্গাদের।

ক্যাম্প ১৭ এর বাসিন্দা কামাল বলেন, ক্যাম্পে দুষ্কৃতিকারীরা দোকান থেকে টাকা-পয়সা নিত। মালামাল বিক্রি করলে টাকা দিতে হতো। ঠিক মতো ব্যবসা করতে দিতো না।

আরেক রোহিঙ্গা করিম বলেন, ক্যাম্পে যে হুমকি-ধমকি দিতো এখন তা নেই। এখন প্রতিনিয়ত পুলিশ টহল দিচ্ছে।

ইরানি পাহাড় ব্লকের মাঝি ছৈয়দ আলম বলেন, আগে ক্যাম্পে লুটপাট করতো, নারীদের নির্যাতন করতো। কিন্তু এখন আমরা ক্যাম্পে খুব শান্তি পাচ্ছি। পুলিশি নিরাপত্তা থাকায় রাতের বেলায়ও ঘরের দরজা খোলা রেখে ঘুমাতে পারছি।

রোহিঙ্গা নারী তৈয়বা বেগম বলেন, ক্যাম্পে আগে মারামারি, ঝগড়া-ঝাটি, চুরি-ডাকাতি এসব হতো। কিন্তু এসব এখন কমে গেছে পুলিশ নিয়মিত টহল দেওয়ার কারণে। দিনে ও রাতে পুলিশ নিরাপত্তা বাড়িয়েছে তাই নিরাপদে ক্যাম্প ঘুমাতে পারছি।

অপর নারী খতিজা খাতুন বলেন, ক্যাম্পে নানা সমস্যার কারণে আগে দুশ্চিন্তায় থাকতাম। কিন্তু এখন ব্লকে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানোর কারণে আর চিন্তা করতে হচ্ছে না, ক্যাম্পে স্বস্তি ফিরেছে।

ক্যাম্পে নির্মিত হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। যার মাধ্যমে প্রতিদিনই পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের চলাফেরা। দুর্গম এলাকায় নিয়মিত চলছে টহল। তবে ক্যাম্প কেন্দ্রিক মিয়ানমারের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সবসময় সজাগ থাকার পরামর্শ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের।

উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পে নানা অপরাধমূলক কার্যক্রমের পেছনে মিয়ানমার সরকার এবং তাদের গোয়েন্দা সংস্থা দায়ী। তাই ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া শতভাগ কার্যকর ও অবাধে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।

আর উখিয়াস্থ ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মো. নাইমুল হক বলেন, ক্যাম্পকে নিরাপদ করতে প্রযুক্তিগত কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি নানা পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। যার ফলে গত সাড়ে ৩ মাসে ৬০০ অপরাধীকে আটক করা হয়েছে।

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয় শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার নিরাপত্তার দায়িত্বে করছে এপিবিএনের ৩টি ব্যাটালিয়ন। সুত্র: সময়টিভি

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...