প্রচলিত শিক্ষায় শিক্ষকেরা একাডেমিক কারিকুলামকে প্রাধান্য দিয়ে ও নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এনগেজ টুলকিটে শিশুর গুণাবলী, তাদের মতামত ও পছন্দকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এনগেজ টুলকিট ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশি শিশুদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিশুদেরও সৃজনশীলতা ও মেধার বিকাশ ঘটবে।
আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর ২০২৫) কক্সবাজারের স্থানীয় একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এই অভিমত তুলে ধরেন। ‘এনগেজ টুলকিট ডিসেমিনেশন’ শিরোনামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট (আইইডি)।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের মানবিক সংকট ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির (এইচসিএমপি) সহযোগী পরিচালক ও অফিস ইনচার্জ রেজাউল করিম।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক আইইডির পার্টনারশিপ অ্যান্ড কমিউনিকেশনস বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সাঈদ মাহমুদ সানি, হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রিশনের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক নাদিয়া হোসেন।
অনুষ্ঠানে এনগেজ টুলকিট সম্পর্কে উপস্থাপনা তুলে ধরেন এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রিন্সিপাল রিসার্চার মেগান সিলান্ডার, নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিরোকাজু ইয়োশিকাওয়ান ও গবেষক শ্যারন কিম। এছাড়া টুলকিটের বাস্তব ব্যবহারিক পদ্ধতি নিয়ে আরেকটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন আইইডির সিনিয়র গবেষক শাকিলা ইয়াসমিন ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা স্ট্রিট চাইল্ডের গবেষক ইমতিয়াজ হৃদয়। এতে সমাপনী বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক আইইডির প্রোগ্রাম হেড সৈয়দা সাজিয়া জামান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয় ‘এনগেজ টুলকিট’ ব্যবহার মাধ্যমে জন্মের পর থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া মানবিক প্রেক্ষাপটে খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার প্রসার ঘটবে।
বক্তারা জানান, ’এনগেজ টুলকিট’ু প্রাকপ্রাথমিক এবং প্রাথমিক (০-১২ বছর) শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। তারা বাংলাদেশে এই টুলকিট কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে, সেটার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, এখানে যে টুলকিট সম্পর্কে বলা হয়েছে, তা খুবই ভালো। তবে এর প্রায়োগিক ব্যবহারে আমাদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের আরও বেশি চিন্তা করতে হবে।
লেগো ফাউন্ডেশনের সহায়তায় আরটিআই ইন্টারন্যাশনাল, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি গ্লোবাল টাইজ ফর চিলড্রেন, ইডিসি, স্ট্রিট চাইল্ড, এইআইওটিইউ, আনলিমিটেড চাইল্ড, জেট এডুকেশনের সমন্বয়ে এই টুলকিট তৈরি করা হয়েছে।
ব্র্যাক আইইডির গবেষণায় দেখা যায়, ব্র্যাক এর প্লে ল্যাবস এবং হিউম্যানিটেরিয়ান প্লে ল্যাবস বাংলাদেশ ও উগান্ডায় শিশুদের খেলার মাধ্যমে শেখাকে জোরালোভাবে সমর্থন করে। একই সঙ্গে এই টুলের ব্যবহারকে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক করে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের ৫টি দেশে এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, উগান্ডা, সিয়েরা লিওন, সাউথ আফ্রিকা ও কলম্বিয়া।