উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন হত্যাকাণ্ডের জের ধরে পাহাড়িদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় তিন থেকে চারশ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে শনিবার দুপুর পর্যন্ত অন্তত সাতজনকে আটক করা হয়েছে। লংগদু থানায় শনিবার এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট থানার ওসি মমিনুল ইসলাম।
আটককৃতরা হলেন- সাইফুল, শাহ আলম, মো. শহীদ, আবুল কালাম, শরিফুল, শরিফ ও মো. মোস্তফা।
এদিকে শনিবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান ও পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান। এই নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকেও সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার শীর্ষ এই কর্মকর্তারা।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সফর শেষে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ এক জরুরি সভায় অংশ নেন তারা।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ দীঘিনালার চারমাইল এলাকায় পাওয়া যায়। স্থানীয় বাঙালিরা এই ঘটনার জন্য পাহাড়ের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দায়ী করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে নয়নের লাশ নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা সদরে আসার পথে পাহাড়িদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় শতাধিক বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
১৪৪ ধারা প্রত্যাহার
রাঙামাটির লংগদুতে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। স্থানীয় এক যুবলীগ নেতার লাশ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লংগদুর কয়েকটি এলাকায় পাহাড়িদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় শুক্রবার (২ জুন) ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে উল্লেখ করে এই নির্দেশ প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন রাঙামাটির ডিসি মানজারুল মান্নান।
উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জরুরি আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় অংশ নেওয়ার পর ডিসি জানান, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নিরূপণ করতে একটি পর্যবেক্ষক কমিটি করা হবে। যার যতটুকু ক্ষতি হয়েছে ততটুকুই যাতে পেয়ে যান সেই দিকে খেয়াল রাখা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতারা এই জরুরি সভায় অংশ নেন।
প্রমোদ চাকমা
লংগদুর ঘটনায় প্রায় আড়াইশ ঘর পুড়ে ছাই
এর আগে শনিবার সকালে ডিসি মানজারুল মান্নান ও পুলিশ সুপার সাইদ তারিকুল হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তারা জানান, এই নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন তারা। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকেও সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার শীর্ষ এই কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার (১ জুন) লংগদু উপজেলা থেকে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক ও স্থানীয় সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন দুই যাত্রী নিয়ে দীঘিনালার দিকে রওনা হন। দুপুরের পর দীঘিনালার চার মাইল এলাকায় তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে সন্ধ্যায় ফেসবুকে তার মৃতদেহের ছবি দেখে শনাক্ত করে পরিবার ও বন্ধুরা। স্থানীয় বাঙালিরা এই ঘটনার জন্য পাহাড়ের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দায়ী করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে নয়নের লাশ নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা সদরে আসার পথে পাহাড়িদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় শতাধিক বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।