ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/০৩/২০২৩ ১২:২৩ এএম

নওগাঁ শহর থেকে আটকের পর র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিন (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে আটকের পর শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই নারীর মৃত্যু হয়।

সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন।

র‌্যাবের ভাষ্য, সুলতানা জেসমিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করা হয়েছিল।

নিহত সুলতানা জেসমিনের মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক (মন্টু) বলেন, ‘আমার ভাগনি বুধবার সকালে অফিস করার জন্য বাসা থেকে বের হন। ওই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুক্তির মোড় থেকে একটি সাদা মাইক্রোতে র‌্যাবের পোশাক পরা লোকজন তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাঁকে কোন ক্যাম্পে নেওয়া হলো, এ ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ-খবর নিতে থাকি।

দুপুর ১২টার পর জানতে পারি, সুলতানা নওগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে গিয়ে দেখি র‌্যাবের লোকজন সেখানে। ভাগনি কোনো কথাবার্তা বলতে পারছে না। এরপর কিছুক্ষণ পর তাঁকে রাজশাহী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। শুক্রবার সকাল মৃত্যু হলেও লাশ দেওয়া গতকাল দুপুরের পর।’

তিনি বলেন, সুলতানার সঙ্গে তাঁর স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয় ১৭ বছর আগে। এরপর সে তাঁর এক সন্তানকে অত্যন্ত কষ্ট করে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে লালন-পালন করে আসছে। নওগাঁ শহরের জনকল্যাণ এলাকায় একটা ভাড়া বাড়িতে থেকে ছেলেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করাচ্ছে। সে ভূমি অফিসের একজন সামান্য কর্মচারী। কোনো দিন তাঁর বিরদ্ধে কোনো দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের অভিযোগ কেউ করতে পারেনি।

সুলতানার ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকত বলেন, আমার মা চক্রান্তের শিকার হয়েছে। র‌্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, যাঁর কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

রাজশাহী র‌্যাব-৫ এর কোম্পানী কম্পানী কমান্ডার সিপিএসসি মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, ‘সুলতানা জেসমিনের বিরুদ্ধে পাওয়া আর্থিক প্রতারণার একটি অভিযোগ পাওয়ার পাই। তাঁর ব্যাংক হিসেবে অস্বাভাবিক টাকা লেনদেনের অভিযোগ ছিল। পরে তাঁর ব্যাংক স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করে আমরা তাঁর সত্যতা পাই। অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে র‌্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়। আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তৎক্ষণাৎ তাঁকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক ট্রিটমিন্টের পর চিকিৎসকেরা তাঁকে রাজশাহী নেওয়ার পরামর্শ নেন। এরপর তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয় এবং গত শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক করে তাঁর মৃত্যু হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে গতকাল শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে স্বজনদের কাছে তাঁর লাশ হস্তান্তর করা হয়।’

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, আটকের পর ওই নারীকে র‌্যাবের কোনো ক্যাম্পে নেওয়া হয়নি। আটকের পর পরই তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। অসুস্থ্য হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার পর থেকেই তাঁর পরিবারের লোকজন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গেই ছিল। নির্যাতনের যে অভিযোগ করা হচ্ছে, এটা সঠিক নয়।

পাঠকের মতামত

পুলিশ থেকে বাঁচতে জীবনটাই দিলেন সিএনজিচালক

গ্রামের চন্দনাইশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে ...

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চলন্ত সিএনজিতে সিলিন্ডার বি’স্ফোরণ, চালক নিহত

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চন্দনাইশ এলাকায় চলন্ত সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুনে দগ্ধ হয়ে ...