আবদুল্লাহ আল আজিজ,উখিয়া নিউজ ডটকম :
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশের উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখতে তাদের ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা।
রোববার (২৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় প্রতিনিধি দলটি প্রথমে বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের ‘নো ম্যান্স ল্যান্ডে’ অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের দেখতে যায়। পরে তারা বালুখালীর ময়নার ঘোনা পরিদর্শন শেষে কুতুপালং ক্যাম্পে আসে।
কুতুপালংয়ের ব্লক ডি ফাইভে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিনিধিরা। প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে আসা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান পেরুর গুস্তাভো মেজার চুয়াদ্রা।
রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখার পাশাপাশি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলবেন।
শনিবার (২৮ এপ্রিল) বিশেষ ফ্লাইটযোগে সরাসরি কক্সবাজারে আসা এ প্রতিনিধি দলটি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের পর ঢাকা যাবে। রাতে রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনে প্রতিনিধি দলটির সৌজন্যে এক নৈশভোজের আয়োজন থাকবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। তার পরদিন সোমবার (৩০ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিনিধি দলটির সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সফর শেষে একই ইস্যুতে ৩০ এপ্রিলই দুইদিনের সফরে মিয়ানমার যাবে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলটি। তার আগে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরবেন নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিরা।
এ দলে রয়েছেন জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধি। এ ছাড়া এই দলে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ফ্রান্সের মতো নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিও রয়েছেন। থাকছেন নেদারল্যান্ডস, কুয়েত, বলিভিয়া, ইথিওপিয়া, কাজাখাস্তান, পেরু, পোলান্ড, সুইডেন এবং আইভরি কোস্টের প্রতিনিধিও।
গত বছরের আগস্টের শেষ দিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন শুরু করে। এসময় কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। ধর্ষণ করা হয় শত শত রোহিঙ্গা কিশোরী-নারীকে। নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সবমিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি। এই দমন-পীড়নকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে আখ্যা দেয় জাতিসংঘ।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে মিয়ানমার দমন-পীড়ন থামিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা করে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনে রাজি হলেও ঢাকার অভিযোগ, এই প্রক্রিয়ায় গড়িমসি করছে নেপিদো। সেজন্য আসন্ন বর্ষায় পরিস্থিতি আরও বিপর্যয়কর হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা পর্যবেক্ষকদের।