উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে তা ১৯৯২ সালে দেশ দুটির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আলোকেই হয়েছে বলে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার পর সু চির কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা বলা হয় বলে শুক্রবার মিয়ানমার টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সু চির কার্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সই হওয়া চুক্তিটি ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আলোকেই করা হয়েছে এবং রাখাইনের বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের পর্যায়ক্রমে যাচাই ও ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সাধারণ নির্দেশিকা ও নীতিমালা এতে রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, 'বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ ও ভালো প্রতিবেশীসূলভ সম্পর্কের ভিত্তিতে বর্তমানে যে চুক্তিতে উভয় দেশ সম্মত হয়েছে তাতে মিয়ানমারের দৃঢ় অবস্থান ফুটে উঠেছে এবং এই চুক্তির মধ্য দিয়ে উভয় দেশের স্বার্থই রক্ষিত হয়েছে।'
এর আগে রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বৃহস্পতিবার সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নিরাপত্তা অভিযানের নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী নৃশংসতা শুরু করে। এ অভিযানকে এরই মধ্যে জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্র 'জাতিগত নিধনযজ্ঞ' বলে অভিহিত করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইনে মানবতাবিরোধী অপরাধ।
রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ লাখের মতো রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এ ছাড়া আগে থেকেই পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে অবস্থান করছে। এতে মোট রোহিঙ্গা সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ ছাড়িয়েছে।
রাখাইনে শত শত বছর ধরে বসবাস করে এলেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজেদের নাগরিক মনে করে না মিয়ানমার।