প্রকাশিত: ২২/১২/২০২১ ৯:২৭ এএম

রোহিঙ্গা ইস্যুকে আন্তর্জাতিক বিষয় উল্লেখ করে তাদের প্রত্যাবর্তনে আন্তর্জাতিক মহলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারের হাতে। আর চাপে পড়লেই মিয়ানমার কথা শোনে। তাই বিশ্বের উচিত দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি করা। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে আন্তর্জাতিক মহল প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখছে না এমন অভিযোগ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু ও মিয়ানমারের গণহত্যা নিয়ে কথা বলছে না উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো। তারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে পুঁজি করে ব্যবসাবাণিজ্য বাড়াচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ডিপ্লোমেট ম্যাগাজিন আয়োজিত রোহিঙ্গা সংকট ও প্রত্যাবর্তন বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে আরও বক্তব্য দেন- সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ড. দেলোয়ার হোসেন, মানবাধিকার কর্মী আসিফ মুনীরসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, দাতা সংস্থার প্রতিনিধি ও মানবাধিকার কর্মীরা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমার শুরু করেছে, তাদেরই এটি শেষ করতে হবে। রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে একসময় রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ছিল। তারা সম্পদশালী ছিল। কিন্তু এখন তারা রাষ্ট্রবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এই সমস্যা মিয়ানমার তৈরি করেছে। একে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। অথচ কিছু পশ্চিমা দেশ এখনো মিয়ানমারের সঙ্গে পুরোদমে ব্যবসাবাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। চীন মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে আড়াই লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে ঠেলে দেয় মিয়ানমার। বাংলাদেশের সঙ্গে বছরের পর বছর মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে চেয়েছে। কিন্তু কথা রাখেনি। এমনকি যখন মিয়ানমারের সেনারা রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায় তখন বিশ্বের কোনো দেশ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। তখন পাশে থেকে তাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছিল একমাত্র বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ চাপ অনুভব করছে কি না-জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের দেশে কিছু লোক আছেন, যারা ধারাবাহিকভাবে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। তারা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন, মিথ্যা ভিডিও বানাচ্ছেন। আর আপনারা যেগুলো বলেন, সেগুলো ওরাও (যুক্তরাষ্ট্র) বলে। বাংলাদেশে একজন মরলে বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়, আর যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেলে বলা হয় দায়িত্ব পালনের সময় মারা গেছে। আমাদের দেশে একজন মরলেই সংবাদপত্র বড় হরফে লিখে বিনা বিচারে হত্যা। ওই সব এখন তারা ফলো করে। আপনাদের কাজগুলো নিয়েই যেগুলো তাদের দরকার, সেগুলো করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে দেশেই কিছু লোক আছেন, যারা দেশের উন্নয়নে খুব সন্তুষ্ট নন। একদল লোক আছেন, যারা মনে করেন আওয়ামী লীগ এত ভালো করে ফেলছে কেন! সুতরাং তারা এটা পছন্দ করেন না। খুব সম্ভবত তারা তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) কাছ থেকে টাকা পান। তারা তথ্যগুলো ঠিকমতো দেন না। মিথ্যা তথ্য দেন। আর অনেকে তা বিশ্বাস করেন। সেখানে আমাদের কিছু কাজ করার সুযোগ আছে। যখনই কোনো দেশ উন্নতি করতে থাকে, তখনই তার শত্রু বাড়ে, চাপও বাড়ে। আপনি যখন সহকর্মীর থেকে ভালো করেন, অনেক সহকর্মীই শত্রু হয়ে দাঁড়ায়। আপনি বেশি ভালো করলে কিছু শত্রুর দেখা পাবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বা অন্য কোনো কারণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে বাংলাদেশের ওপর কোনো চাপ নেই। তারা তাদের নিয়মে চলছে। সরকারিভাবে তারা বিশেষ কিছু করেনি, তারা তাদের কাজ করছে। আমরা আমাদের কাজ করছি। যুগান্তর

পাঠকের মতামত

কঠোর নির্দেশনার পরও মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা ছাড়ছে না ভোটের মাঠ

সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিতে কঠোর নির্দেশনা ...