বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ অঞ্চলে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইয়াবা কারবারিরা। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে নতুনভাবে গড়ে উঠছে শক্তিশালী মাদক নেটওয়ার্ক। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে এ বিপজ্জনক মাদক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে রাতের আঁধারে লক্ষ লক্ষ ইয়াবা চালান প্রথমে ঢোকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। এরপর সেখান থেকে সশস্ত্র গ্রুপগুলোর মাধ্যমে বণ্টন করা হয়। এসব গ্রুপ নিয়মিতভাবে টেম্পো, মাইক্রোবাস, এমনকি পিকআপে করে ইয়াবা বহন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাচার করছে।
সন্ধ্যার পর থেকেই ক্যাম্পে অচেনা লোকজনের আনাগোনা বেড়ে যায়। নতুন নতুন গাড়ির উপস্থিতি, অপরিচিত ব্যক্তির চলাফেরা ও অস্থির পরিবেশে স্থানীয়দের মধ্যে ভয়-আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতর ও আশপাশে এখন ইয়াবা পাহারা বাহিনী" সক্রিয় রয়েছে, যাদের হাতে অস্ত্রও দেখা যায়। তারা গ্রুপভিত্তিক পাহারা দিয়ে ইয়াবার চালান নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।
একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এখন আর ইয়াবা পাচার সীমান্তেই সীমাবদ্ধ নয়, ক্যাম্পই হয়ে উঠেছে মূল ডিপো। দেশের অস্থিরতা আর নজরদারির ঘাটতি কাজে লাগিয়ে নতুন সিন্ডিকেটগুলো খুব দ্রুত বড় হয়ে উঠছে।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এসব ইয়াবা সিন্ডিকেটের পেছনে থেকে পুরো নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছে। এসব প্রভাবশালী ব্যক্তি বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসা নিয়ে রোহিঙ্গা পরিচয়ে সহযোগী রাখছে। দিনদিন বাড়ছে অপরিচিত মুখের আনাগোনা, আর মাদক ব্যবসার টাকার ছাপ দেখা যাচ্ছে স্থানীয় ব্যবসা, বাড়িঘর ও যানবাহনে।
মাদকবিরোধী বাহিনীর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানবজমিনকে বলেন, আমরা জানি, ইয়াবা ক্যাম্পকেন্দ্রিকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। এর সঙ্গে বড় বড় সিন্ডিকেট যুক্ত। কিন্তু গোয়েন্দা তথ্য, নিরাপত্তা জটিলতা ও মানবিক বিবেচনায় অভিযান চালাতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়।
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে ঘিরে যদি দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ অভিযান না চালায়, তাহলে উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চল আবারও ইয়াবার রাজধানীতে পরিণত হবে।