প্রকাশিত: ১০/০৭/২০২২ ৮:১২ পিএম

দেশজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গারাও ঈদের আনন্দে শামিল হয়েছেন। টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও ছড়িয়ে পড়েছে ঈদের আমেজ। ঈদের আমেজ আর আনন্দের সঙ্গেও মিশে ছিল নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আকুতি।

রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন রোহিঙ্গারা। ঈদের নামাজ আদায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন ইমাম ও মুসল্লিরা।

মোনাজাতে অংশ নেয়া রোহিঙ্গারা তাদের উপর হওয়া নির্যাতনের বিচার চেয়ে এবং নিজ দেশে মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। একইসঙ্গে তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানান তারা।

বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরে দেখা যায়, রোববার সকাল থেকে নতুন জামাকাপড় পরে ক্যাম্পের রাস্তায় হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দে মেতে উঠেছে শিশুরা। শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও নতুন জামাকামড় পরে ঈদের নামাজে অংশ নেন।

রোহিঙ্গাদের দেওয়া তথ্য মতে, কক্সবাজারের মোট ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৩২০টি মসজিদ ও ৯৪০টি নূরানী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব মসজিদ ও নূরানী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা।

টেকনাফের লেদা শিবিরের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘অন্য বছর তুলনায় এবারে ক্যাম্পে ঈদের আমেজ বেশি দেখা গেছে। এছাড়া এবার ৭৮টি কোরবানির পশু জবাই হয়েছে। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

তিনি আরও বলেন, ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে বিশেষ করে করোনা থেকে মুক্তির দোয়ার পাশপাশি নিজ ভূমিতে যেন অধিকার নিয়ে ফিরে যেতে পারি সেই প্রার্থনাও করা হয়েছে।

কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা নুর আজিজ বলেন, করোনা প্রতিরোধে ক্যাম্পের লোকজন সচেতন না হলেও করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে এখানকার লোকজন ভয়ে আছে। কিন্তু ঈদে ছেলে-মেয়েদের কোনোভাবেই ঘরে রাখা যাচ্ছে না। বড়রা ঘরে থাকার চেষ্টা করলেও শিশু-কিশোররা এক ঘর থেকে অন্য ঘর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বলতে গেলে, ক্যাম্পে শিশু-কিশোররা ঈদের খুশি মেতে উঠেছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার ক্যাম্পে ঈদের আনন্দ বেশি।

ঈদ উপলক্ষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসেবা মানতে আগে থেকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ৮ এপিবিএন-এর অতিরিক্ত অধিনায়ক (মিডিয়া) কামরান হোসেন বলেন, ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা ঈদ উদযাপনে মেতে উঠেছেন। তবে কেউ যাতে ক্যাম্প থেকে বাইরে না যায়, সেজন্য তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ক্যাম্পে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেখানে নজরদারি রাখা হয়েছে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট কোরবানি ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে রোহিঙ্গাদের বিদ্রেহী সংগঠন আরসা রাখাইনে ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলা চালায়। এর প্রেক্ষিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর ব্যাপক নিপীড়নমূলক অভিযান শুরু করে। সেই নিপীড়ন থেকে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি শিবিরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। সমকাল

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...

ইসলামপুরে আটক রোহিঙ্গা যুবককে কুতুপালং ক্যাম্পে হস্তান্তর

জামালপুরের ইসলামপুরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার মো. রোবেল (২২) নামের সেই রোহিঙ্গা যুবককে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ের ট্রানজিট ...