প্রকাশিত: ০১/০৫/২০১৯ ৯:১৯ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)।

মিয়ানমারের ইরাওয়াদ্দি পত্রিকার খবরে বলা হয়, আরসা তাদের টুইটার একাউন্টে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ দাবি করেছে।

গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)’র এক প্রতিবেদনে বলা হয় আরসা বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরগুলোতে নির্বিঘ্নে তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিবেদনে দাবী করা হয়, আরসার সদস্যরা বেশিরভাগ শরণার্থী শিবির নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রায়ই এর বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ড চালায়।

প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নেতাদের নিরাপত্তার অবস্থার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের গৃহীত উদ্যোগ বাস্তবায়নের সম্ভাবনা আলোচনা করা হয়েছে প্রতিবেদনে। ক্যাম্পগুলোতে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতেও উৎসাহ দেয়া হয়েছে।

আইসিজি বলছে, আরসাসহ বিভিন্ন দল ক্যাম্পগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। দলটি তাদের লক্ষ্য পূরণে আরও সহিংসতা চালানোরও চেষ্টা করছে বলে দাবী করে সংগঠনটি।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সহিংস বিভিন্ন দল ক্যাম্পে অবাধে তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। সন্ধ্যা নামলে মানবাধিকার কর্মীরা কক্সবাজার শহরে ফিরে গেলে নিরাপত্তার ভার থাকে শরণার্থীদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়া ওয়াচম্যানদের ওপর।’

আইসিজি দাবী করছে, জুন ২০১৮-য় আরিফ উল্লাহ নামে এক ক্যাম্প লিডারকে কুপিয়ে হত্যার জন্য সম্ভবত আরসা দায়ী। আরিফ উল্লাহ’র বিরুদ্ধে আরসার হুমকি হোয়াটসঅ্যাপে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল।

এছাড়াও জঙ্গিরা কোনও শাস্তির আশঙ্কা ছাড়াই শরণার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, অপহরণ ও হত্যা করছে বলে দাবী করা হয় প্রতিবেদনে। এসব কারণে শরণার্থীরা তাদের ‘ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে বলে জানায় আইসিজি।

মঙ্গলবার ইরাওয়াদ্দি জানায়, আরসা তাদের টুইটার একাউন্টে দেওয়া এক বিবৃতিতে আইসিজির প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্যগুলো ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছে।

আরসার দাবী, রাখাইনে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য সংগ্রামকে কলুষিত ও বিকৃত করার চেষ্টা করছে আইসিজি।

আরসা নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য। তারা এসব সংগঠনকে এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে বিবৃতিতে।

ইরাওয়াদ্দি জানায়, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়ন থেকে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আঠারো মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত এসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা অস্পষ্ট। রাখাইনের দক্ষিণে আরাকান আর্মি (এএ) ও সরকারি সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করেছে।

জাতিসংঘ অভিযোগ করেছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে (আইসিসি) সেনাপ্রধান সেন-জেন মিন অঙ্গ হ্লেইংয়ের বিচারের দাবী জানিয়েছে।,
সুত্র : পরিবর্তন

পাঠকের মতামত

ভারতে আশ্রিত আওয়ামী নেতাদের নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন মমতা, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়ার হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ...

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন করছে আরাকান আর্মি: এইচআরডব্লিউ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর দমনমূলক নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে জাতিগত ...

রয়টার্সের প্রতিবেদনমিয়ানমারের বিরল খনিজে নজর যুক্তরাষ্ট্রের, বিদ্রোহীদের পক্ষে টানছে ট্রাম্প প্রশাসন

মিয়ানমারের বিরল খনিজ সম্পদের দিকে চোখ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মিয়ানমারের বিরল খনিজে চীনের কর্তৃত্ব সরিয়ে নিতে ...

মিয়ানমার জান্তা ঘনিষ্ঠদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

মিয়ানমারের সামরিক জান্তাঘনিষ্ঠ চার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অর্থ ...

বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ব্ল্যাকলিস্ট, তালিকায় এক ডজন দেশ

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ ও ভিসা পাওয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন ...