বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৯/১১/২০২২ ৭:৫০ এএম

দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন পর্তুগাল থেকে অনেক রাজস্ব পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে অচিহ্নিত ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করলে আরো ব্যবসায়িক সুযোগ উন্মুক্ত হবে। চট্টগ্রাম এখন পর্তুগালের ব্যবসায়িক কেন্দ্র। এছাড়া মাতারবাড়ী পোর্ট চালু হলে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি শিপিং যোগাযোগ শুরু হবে বলে আমি আশা করছি। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য হওয়ায় পর্তুগাল রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের পাশে থাকবে বলে আশা করি। সমর্থনের মাধ্যমে তারা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা করবে। এছাড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের পর্তুগালে যেতে হলে একটা বড় অংকের টাকা এবং সময় লাগে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশে পর্তুগিজ দূতাবাস স্থাপন করার মাধ্যমে সমস্যাগুলো সমাধান হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) ‘বাংলাদেশ-পর্তুগাল রিলেশন্স: কোয়েস্ট ফর ডিপার বাইলেটারাল কো-অপারেশন’ শীর্ষক সেমিনারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বিআইআইএসএসের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত কাজি ইমতিয়াজ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পর্তুগালের পররাষ্ট্র ও সহযোগিতা বিষয়ক সচিব ড. ফ্রান্সিসকো আন্দ্রে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন।

পর্তুগালের পররাষ্ট্র ও সহযোগিতা বিষয়ক সচিব ড. ফ্রান্সিসকো আন্দ্রে বলেন, বাংলাদেশ-পর্তুগালের মধ্যে ঐতিহাসিক, সমসাময়িক শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। সামনের দিনগুলোয় দুই দেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন এবং জলবায়ুর পরিবর্তনে গুরুত্ব দেবে। বাংলাদেশ যেহেতু গ্লোবাল মাইগ্রেশনে সামনের দিকে আছে তাই বাংলাদেশী নাগরিকদের সুবিধার জন্য আমরা ঢাকায় দূতাবাস স্থাপনের কথা ভাবছি।

বাংলাদেশ একটি দ্রুত বর্ধনশীল দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দূতাবাস স্থাপন হলে বিভিন্ন খাতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মী যাওয়ার সুযোগ পাবে দেশটিতে।

চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ফ্রান্সিসকো আন্দ্রে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আছি। আগামী ডিসেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এশিয়ান সামিটে আবারো আলোচনার সুযোগ হবে। বাংলাদেশের প্রতি পর্তুগালের সমর্থন থাকবে।

আলোচকের বক্তব্যে সাব্বির আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ভাষা এবং খ্রিস্টান ধর্ম বিস্তারে পর্তুগিজদের অবদান আছে। ব্যবসায়িক দিক থেকেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমে সামনের দিকে এগোচ্ছে। এরই সূত্র ধরে আমরা ২০২০ সালে পর্তুগালের লিসবনে দূতাবাস স্থাপন করেছি। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে দ্বৈতকর নীতি পরিহারের একটি চুক্তি হওয়ার কথা আছে। এটি স্বাক্ষর হলে আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ আরো বাড়বে।

বাংলাদেশ ও পর্তুগাল একই ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন বলেন, উপকূলীয় দেশ হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ার ক্ষেত্রে দুই দেশ একই সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ক্রমে এগিয়ে যাচ্ছে।

পাঠকের মতামত