প্রকাশিত: ১০/০৭/২০২০ ৭:৩৯ এএম
ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা ইস‌্যুতে নতুন করে সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ। এর মধ‌্যে রয়েছে এই জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি ও বাংলাদেশ-ভারতের জলসীমা ব্যবহার করে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টার বিষয়।

এরই মধ‌্যে সৌদি আরব, মালয়েশিয়ায় আটক রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চায়। কারণ হিসেবে তারা বলছে, এই রোহিঙ্গাদের কাছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কী অবস্থান নেবে, তা এখনো ঠিক করতে পারেনি সরকার। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে—এগুলো দালালচক্র ও রোহিঙ্গাদের অপতৎপরতা। এছাড়া, নতুন করে কোনো রোহিঙ্গার দায়িত্ব নিতে রাজি নয় সরকার।

বেশ কয়েকবছর ধরে মালয়েশিয়া রোহিঙ্গাদের কাছে একটি অন্যতম গন্তব্য। দেশটিতে পৌঁছাতে মানবপাচারকারীদের অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তারা বেছে নেন সমুদ্রপথ। এই পথে তারা ইন্দোনেশিয়ায়ও পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন।

বিষয়টি বড় আকারে আলোচনায় আসে গত ৮ জুন মালয়েশিয়ার নৌবাহিনীর হাতে ২৬৯ জন রোহিঙ্গা আটক হওয়ার পর। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় কেদাহ রাজ্যের লংকাউয়ি দ্বীপে নিজেদের নৌকা ডুবিয়ে সাঁতার কেটে তীরে ওঠার সময় এসব রোহিঙ্গাকে আক্কেরা হয়। যদিও তারা কোন দেশ থেকে সাগর পাড়ি দিয়েছেন, তা স্পষ্ট করেনি দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স (এনটিএফ)। কিন্তু দেশটির পক্ষ থেক বলা হচ্ছে এসব রোহিঙ্গাকে যেন বাংলাদেশ ফিরিয়ে আনে।

এদিকে, সৌদি সরকার বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী ৪২ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় তোলে। সৌদি আরবের যুক্তি—বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে এসব রোহিঙ্গা আকাশপথে সে দেশে গেছেন। তাই তাদের বাংলাদেশকেই ফিরিয়ে নিতে হবে। এ নিয়ে ২০১৯ সালে একাধিকবার চিঠিও দিয়েছে সৌদি আরব। ওই চিঠির জবাবে সৌদি আরবকে বিস্তারিতভাবে জানানোর অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার উপস্থিতির কারণে স্থানীয় পর্যায়ে জনসংখ্যাগত ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। এরই প্রভাবে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মধ্যে পারস্পরিক অসন্তোষ, সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া, রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে বাংলাদেশি জন্মনিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরিসহ ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তিকরণের চেষ্টায়ও লিপ্ত হওয়ার খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট গভীরতর উদ্বেগের বিষয়। এই সংকট সমাধানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনা চলছে। কিন্তু মিয়ানমারের অসহযোগিতার কারণে সমাধান হচ্ছে না। ’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে যে পাঁচ দফা প্রস্তাব রেখেছিলেন, মিয়ানমারের অসহযোগিতার কারণে সেগুলোরও কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। ’

উল্লেখ‌্য, ২০১৮ সালের নভেম্বরে এবং ২০১৯ সালের আগস্টে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মধ‌্যে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ‌্যমে রোহিঙ্গা প্রত‌্যাবর্তনের উদ‌্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু দুই বারের উদ্যোগই ব্যর্থ হয়।

পাঠকের মতামত

অপহরণের পর মুক্তিপণের জন্য বাবাকে শোনানো হচ্ছে নির্যাতনের আর্তনাদ

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে কক্সবাজার আসার পথে অপহৃত তরুণ রিয়াজুল হাসানকে (১৮) ধারাবাহিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। ...

ফেসবুকে শাহজালাল বাবলুর স্ট্যাটাস নিয়ে , ডাঃ রুমির বক্তব্য ও তীব্র প্রতিবাদ

শাহজালাল বাবলুর স্ত্রী শারমিন হিমু কয়েক মাস ধরে স্বনামধন্য গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আরিফা মেহের রুমির ...