ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০২/০৯/২০২৫ ৭:০৫ এএম

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে ১০০ কিলোমিটার রেল সড়ক স্থাপনের মাধ্যমে কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। গুরুত্ব বিবেচনায় জেলার চকরিয়ায় তিনটি রেলস্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। রেলপুলিশ না থাকায় স্টেশনগুলো অপরাধীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রেলযাত্রীরা।
রেলসংশ্লিষ্টরা বলছেন, চকরিয়া উপজেলাটি এমন স্থানে অবস্থিত, যার চারপাশে বেশ কয়েকটি উপজেলা বিদ্যমান। এসব উপজেলার মানুষ চকরিয়া রেলস্টেশন হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করছেন। এ কারণে উপজেলার হারবাং, মালুমঘাট ও সাহারবিলে রেলস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এসব স্টেশন দিয়ে চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, রামু, সদর, ঈদগাঁওসহ কক্সবাজার জেলা এবং পাশের পাবর্ত্য বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ির মানুষ রেলে যাতায়াত করছেন।

যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দের ভাষ্য, চকরিয়া উপজেলার তিনটি রেলস্টেশন এমন জায়গায় স্থাপিত হয়েছে, যেখানে রাতের বেলায় দূরের কথা, দিনেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন যাত্রীরা। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রেলপুলিশের কার্যক্রম না থাকায় ছিনতাইকারীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে রেলস্টেশনগুলো।
সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আজিজুল হাকিম জানিয়েছেন, রেলস্টেশন চালু হওয়ার পর গত কয়েক মাসে এ স্টেশনে অন্তত ছোট-বড় ৩০-৩৫টি ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে ভোগান্তির ভয়ে দূরবর্তী এলাকার যাত্রীরা থানায় অভিযোগ করতে যায় না।
আবু বক্কর নামের এক রেলযাত্রী জানান, তিনি মাতারবিল কয়লাখনি এলাকায় কাজ করেন। এ জন্য নিয়মিত সাহারবিল রেলস্টেশন হয়ে তাঁকে যাতায়াত করতে হয়। তিনি ইতোমধ্যেই দুইবার ছিনতাইকারীর খপ্পরে পড়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী জিয়াবুল হক জানিয়েছেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনটি চালু হলেও এই রুটে স্থায়ীভাবে রেল পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেনি। চকরিয়ার তিনটি রেলস্টেশনের মধ্যে হারবাং ছাড়া সাহারবিল ও মালুমঘাটে যাত্রী থাকে বেশি। সে কারণে সাহারবিল ও মালুমঘাট স্টেশন এলাকায় ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চকরিয়া স্টেশনমাস্টার মো. ফরহাদ চৌধুরী বলেন, রেলে ভ্রমণকারী পর্যটক ও যাত্রীরা বেশির ভাগ সমস্যায় পড়ে থাকেন চকরিয়া স্টেশন অতিক্রম করার সময়। স্টেশনে পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতি ও নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় সন্ধ্যার পর ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। এ কারণে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত ডাকাত, ছিনতাইকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। এমনকি শারীরিকভাবেও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন অনেকে। রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী তথা রেলওয়ে পুলিশ না থাকার সুযোগে উপজেলার স্টেশনগুলো বখাটেদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে। চকরিয়া রেলস্টেশনের সার্বিক এই চিত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, রেলস্টেশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রেলওয়ে পুলিশ থাকার কথা। কিন্তু নতুন রেললাইন হওয়ায় এখনও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রেলওয়ের জনবল সংকট রয়েছে। চকরিয়া থানা পুলিশ রেলস্টেশনের যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে রেল পুলিশ নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত নানামুখী ঝামেলা অব্যাহত থাকবে। কারণ ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে চকরিয়া থানা এলাকাটি বেশ বড়। এ কারণে তিনটি রেলস্টেশনের পরিপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা থানা পুলিশের পক্ষে কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, রেললাইনে যাত্রী পরিবহন চালু হলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এখনও নিরাপত্তা-সংক্রান্ত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। প্রতিটি স্টেশনে রেল পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এতে স্টেশনগুলোতে প্রতিনিয়ত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটছে। রেলস্টেশনগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নিশ্চিত করতে হলে সংযোগ সড়কগুলোতে
পর্যাপ্ত লাইটিং, নিয়মিত রেলওয়ে পুলিশের টহল জোরদার করতে হবে। ইতোমধ্যে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে রেলস্টেশনের যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত

টেকনাফের হোয়াইক্যং কম্বনিয়ায় প্রথম গভীর নলকূপে পানি, স্বস্তি স্থানীয়দের

জসিম উদ্দিন টিপু,টেকনাফ:: টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ী জনপদ হোয়াইক্যংয়ের কম্বনিয়াপাড়া গ্রামে ১ম বারের মত গভীর নলকুপে ...

এনজিও স্কাসের জেপি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে ভয়াবহ অনিয়ম

# এনজিও স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমার মালিকানাধীন এই প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থীদের জন‍্য মাথাপিছু বরাদ্দ ২৪০০ টাকা, দেওয়া ...

উখিয়া-টেকনাফের তরুণদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আবদুল্লাহ

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের রাজনীতিতে দ্রুত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। ...

কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ প্রশাসনেরপ্যারাসেলিং থেকে ছিটকে গিয়ে ঝাউগাছে ঝুলেছিলেন পর্যটক

কক্সবাজার সৈকতে রোমাঞ্চকর ‘প্যারাসেলিং’ নিয়ম না নেমে পরিচালিত হওয়ায় বারবার দুর্ঘটনার কারণে বিপদজ্জনক হয়ে উঠেছে। ...