উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২/০১/২০২৩ ৯:৩৬ এএম

ছাত্রীদের রুমে ডেকে নিয়ে‘যৌন হয়রানি’তে অভিযুক্ত কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিনকে বদলি করা হয়েছে। তাকে কাপাসগোলা থেকে নগরের দক্ষিণ পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। তার স্থলে পদায়ন করা হয়েছে হালিশহর আহমদ মিয়া সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোমা বড়ুয়াকে।
রবিবার কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে তাৎক্ষণিকভাবে এই সিদ্ধান্ত নেয় চসিকের শিক্ষা বিভাগ। রবিবার (১ জানুয়ারি) চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর নাহার এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ জারি করেন।

একই আদেশে দক্ষিণ পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে জুলেখা আমিনুর রহমান সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ে। আগামীকাল ২ জানুয়ারি বদলিকৃত জায়গায় যোগদান করতে বলা হয়েছে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, ‘স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদ ক্লাস রুম থেকে ছাত্রীদের কথা বলতে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে গায়ে হাত দেয়াসহ বিভিন্ন ভাবে যৌন নিপীড়ন করে থাকেন। এছাড়াও স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছবি তোলার নামেও নানা ভাবে হয়রানি করে থাকেন ছাত্রীদের। এসময় কোন ছাত্রী সেটার প্রতিবাদ করলে তাকে নানাভাবে হুমকি দিতেন।’

‘এর আগেও তার নামে অনেকবার যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে। তার ক্ষমতার ভয়ে সবাই এতদিন চুপ ছিল। আমরা তার অপসারণ চাই। তার বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনে অভিযোগ দিলেও তাকে সরানো হয়নি। সর্বশেষ গতকাল শনিবার এক ছাত্রীকে হেনস্তা করেন তিনি।’

এই অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যা দাবি করে প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বিক্ষোভের সময়ে বলেছিলেন, ‘যৌন নিপীড়নের কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমাকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষকও এসবের সঙ্গে জড়িত। তারাই শিক্ষার্থীদের উসকে দিচ্ছেন। মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, ‘এ বিষয়ে জেনেশুনে তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্ত হলে ব্যবস্থা নিতে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘যখন একটা ঘটনা ঘটেছে। অবশ্যই সে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে হবে। তদন্ত করতে হবে। তারপরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর আমার কাছে এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি।’

অতীতেও এমন ঘটনা রয়েছে উল্লেখ করলে মেয়র বলেন, ‘এর আগেও এমন ঘটনা হয়েছে শুনেছি। সেটা আমার সময়ে হয়নি। শুনেছি তখন ঘটনা তদন্ত করে কোনো সত্যতা পায়নি। এখন যখন আবারও বিষয়টা সামনে এসেছে। তদন্ত করে দেখা হবে।’

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেকবার যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে। ২০১৩ সালে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বরখাস্তও হয়েছিলেন। ৫ বছর পর বহিষ্কারাদেশ কাটিয়ে ২০১৮ সালে একই বিদ্যালয়ে ফের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৯ সালে একইকাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে পেয়েছিলেন সর্তকতার নোটিশ। সেই ঘটনার তিনবছর পর আবার একই অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। এবার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আন্দোলনের মুখে অভিযুক্ত এ প্রধান শিক্ষককে স্কুল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...