মনতোষ বেদজ্ঞ :
এইচএসসিতে কক্সবাজার জেলায় এবার ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। জেলার এবার পাশ করেছে ৫৫ দশমিক ৩২ শতাংশ শিক্ষার্থী। পাশের এই হার গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ। গত বছর জেলায় পাশের হার ছিল ৬৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। সেই হিসেবে এবার জেলায় গতবারের তুলনায় ৮ দশমিক ৪২ শতাংশ কম শিক্ষার্থী পাশ করেছে। কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হারও। এ বছর জেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৮ জন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬৬ জন।জেলা প্রশাসনের শিক্ষা ও কল্যান শাখা সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার এইচএসসিতে পরীক্ষার্থী ছিল ৮ হাজার ৯৯৯ জন। তাদের মধ্যে অংশগ্রহন করেছে ৮ হাজার ৯০৩ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ৪ হাজার ৯২৫ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ২ হাজার ২১৯ জন ছাত্র এবং ২ হাজার ৭৮৬ জন ছাত্রী। এবার বিজ্ঞান বিভাগে পাশের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। জেলায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশগ্রহন করেছিল এক হাজার ৪২ জন শিক্ষার্থী । তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৭৯০ জন। পাশের হার ৭৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন। মানবিক বিভাগ থেকে জেলায় ৪ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ২ হাজার ২১৫ জন। পাশের হার ৪৬ দশমিক ৪২ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে মাত্র ২ জন। বাণিজ্য বিভাগ থেকে জেলায় অংশগ্রহন করে ৩ হাজার ৮৯ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে এক হাজার ৯২০ জন। পাশের হার ৬২ দশমিক ১৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ জন।বরাবরের মতো এবারও জেলায় সাফল্যে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। পুরো জেলায় যেখানে পাশের হার ৫৫ দশমিক ৩২ শতাংশ, সেখানে এই কলেজের পাশের হার ৯২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৫ জন। কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ.কে.এম ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘প্র্রকাশিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে অতীতের ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা এবারও গৌরবজনক ফলাফল করেছে। এবারে এই কলেজের পাশের ৯২ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের মোট পাশের হার ৬১.০৯ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন, চট্টগ্রাম কলেজের পাশের হার ৯০ দশমিক ১৭, চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের পাশের হার ৮৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ, কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের পাশের হার ৬৩ দশমিক ৭২। এ কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলে কক্সবাজার সরকারি কলেজ পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত এবং উৎফুল্ল।’ সূত্রমতে, কক্সবাজার সরকারী কলেজে পাস করেছে ৮৩৩ জন, ফেল করেছে ৬৩ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৫ জন শিক্ষার্থী। কক্সবাজার সরকারী মহিলা কলেজে পাস করেছে ৫৬৯ জন, ফেল করেছে ৩২৪ জন এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে একজন ছাত্রী। কক্সবাজার সিটি কলেজে ৪৯৭ জন পাস করেছে, ফেল করেছে ৩৪৫ জন। কক্সবাজার হাভার্ড কলেজে পাস করেছে ১২২ জন, ফেল করেছে ৯৩ জন। চকরিয়া সিটি কলেজে পাস করেছে মাত্র ১৯ জন এবং ফেল করেছে ৭৮ জন। বদরখালী কলেজে পাস করেছে ৮৭ জন, ফেল করেছে ১১৯ জন। চকরিয়া মহিলা কলেজে পাস করেছে ৩৬৬ জন, ফেল করেছে ২০৩ জন। চকরিয়া কমার্স কলেজে পাস করেছে ২৭ জন, ফেল করেছে ৪৬ জন। হোয়ানক কলেজে পাস করেছে ২২ জন, ফেল করেছে ৬১ জন। মহেশখালী বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজে পাস করেছে ৫১ জন, ফেল করেছে ১১২ জন। কুতুবদিয়া কলেজে পাস করেছে ১৫৭ জন, ফেল করেছে ২২৩ জন। ঈদগাও ফরিদ আহমেদ কলেজে পাস করেছে ১১৯ জন এবং ফেল করেছে ১৭২ জন। উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলুতুনেসা মুজিব মহিলা কলেজে পাস করেছে ২১২ জন, ফেল করেছে ২৭৯ জন। এই কলেজে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে একজন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। মহেশখালী কলেজে একজন জিপিএ-৫সহ পাস করেছে ২৩৯ জন, ফেল করেছে ২৭৮ জন। কক্সবাজার কমার্স কলেজে পাস করেছে ১৫৯ জন ফেল করেছে ৫৯ জন। রামু কলেজে পাস করেছে ১৮৭ জন, ফেল করেছে ৩৫৮ জন। পেকুয়া জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজে পাস করেছে ২৭৫ জন, ফেল করেছে ৩৫ জন পরীক্ষার্থী। টেকনাফ কলেজে পাস করেছে ১২৩ জন, ফেল করেছে ৮৮ জন। মঈনউদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজে পাস করেছে ৬৭ জন, ফেল করেছে ৭ জন। চকরিয়া কলেজে পাস করেছে ২০৩ জন, ফেল করেছে ৪০৪ জন। ডুলাহাজারা কলেজে পাস করেছে ৪০৩ জন, ফেল করেছে ৩০৮ জন। উখিয়া কলেজে পাস করেছে ১৭৯ জন এবং ফেল করেছে ৩১৯ জন। কোন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়নি। প্রসঙ্গত, চলতি বছর ২ এপ্রিল থেকে ১৫ মে এইচএসসির লিখিত পরীক্ষা চলে। এরপর ১৬ থেকে ২৫ মে নেওয়া হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা। সুত্র, দৈনিক কক্সবাজার