কক্সবাজার শহর থেকে মেরিনড্রাইভ প্রবেশ মুখে গাড়ি থামিয়ে পৌর করের নামে চাঁদা তুলছে একদল যুবক। চাঁদার রশিদে লেখা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, অথচ চাঁদা তোলা হয় টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের রাস্তায়। চাঁদা আদায়কালে সড়কে লেগে যাচ্ছে তীব্র যানজট এবং বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন অনেকেই। এতে চরমভাবে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন পর্যটকেরা৷ পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপদ হওয়ায় সময় বাঁচাতে বিভিন্ন এনজিও, আইএনজিও'র গাড়ি মেরিন ড্রাইভ দিয়ে যাতায়াত করেন। চাঁদা তোলার কারণে তারাও বেকায়দায় রয়েছেন।
চাঁদার রশিদ অনুযায়ী প্রতি গাড়ি থেকে টোল আদায় করা হয় ৩০ টাকা। গাড়ির মধ্যে রয়েছে মাইক্রো, নোহা, হাইয়েছ এবং কার।
পর্যটকদের অভিযোগ, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসার প্রধান উদ্দেশ্য বিচ এবং মেরিন ড্রাইভ ঘুরে দেখা। কিন্তু মেরিন ড্রাইভে প্রবেশ মুখে এভাবে চাঁদা আদায় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে যানজটের কারণে সময় নষ্ট হচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন পর্যটকেরা। পৌরসভার করের চাঁদা তোলা হবে বাসটার্মিনালে। কিন্তু সেটি না করে মেরিন ড্রাইভের মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চাঁদা আদায়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা খুবই দুঃখজনক।
স্থানীয়রা জানান, পর্যটকেরা কক্সবাজার আসেন একটু রিলাক্সে সময় কাটাতে। পর্যটকদের জন্যে মেরিন ড্রাইভ পছন্দের অন্যতম। কিন্তু মেরিন ড্রাইভে প্রবেশমুখে এভাবে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা তোলা সবার জন্যে বিরক্তিকর। এটি সরিয়ে আগের মতো বাসটার্মিনাল থেকে পৌর কর আদায়ের ব্যবস্থা করলে ভোগান্তি দূর হবে।
পর্যটক আলমগীর কবির জানান, মুষ্টিমেয় কয়েকজন মানুষের লাভের জন্য এতো মানুষের ভোগান্তি কিছুতেই যুক্তিযুক্ত নয়। মেরিন ড্রাইভের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এভাবে চাঁদা আদায়ের মাধ্যম হতে পারে না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের জোরালো হস্তক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
আরেক পর্যটক সমির শাহা বলেন, পর্যটকদের চাহিদা এবং আকর্ষণের শীর্ষে রয়েছে মেরিন ড্রাইভ। এভাবে চলতে থাকলে মেরিন ড্রাইভের প্রতি পর্যটকদের চাহিদা কমে আসবে। ফলে বিরূপ প্রভাব পড়বে পর্যটনখাতে।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, পর্যটকদের স্বার্থে সেখান থেকে টোল আদায় বন্ধ করা উচিত। পর্যটকদের নিয়ে আমাদের সবকিছু। পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্য হলে সবার জন্যে মঙ্গল।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার পৌরসভা প্রশাসক রুবাইয়া আফরোজ জানান, একই জিনিস গত বছরও ইজারা হয়েছিল তখন কোনো অভিযোগ ছিল না। এখন কেন এত অভিযোগ আসছে? তিনি বলেন, আগে কলাতলী পয়েন্ট থেকে টোল উঠানো হতো, তখন গাড়ির জ্যাম লেগে যেত। পরে সেখান থেকে সরিয়ে বেলী হ্যাচারির আগে নেওয়া হলো, তারপরও অভিযোগ আসছে। রুবাইয়া আফরোজ আরও জানান ঠিক আছে, যখন বারবার অভিযোগ আসছে আমরা পৌরসভার পরবর্তী মিটিংয়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ জানান, ইতোপূর্বে কয়েকজন পর্যটকের কাছে এই সংক্রান্তে অভিযোগ পেয়েছিলাম। পৌর টোল আদায় করতে গিয়ে যেন কোনো পর্যটক বিড়ম্বনার শিকার না হন, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করা হবে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, এটি সেখান থেকে সরিয়ে নিতে পৌরসভাকে বলে দেওয়া হয়েছে। তারা সেটি সরিয়ে নিবে৷
সূত্র ঢাকা মেইল