কক্সবাজারের উখিয়ায় বস্তাবন্দি মহিলার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি নিহতের স্বামী ঘাতক জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ১৫।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার পূর্ব গোমদণ্ডী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। র্যাব-১৫ জানায়, গত ১৩ নভেম্বর উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের তচ্ছাখালী খালে ভেসে থাকা বস্তাবন্দি মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রহিমা আক্তার (৩০) উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং পশ্চিম মরিচ্যা এলাকার জসিম উদ্দিনের স্ত্রী। নিখোঁজ হওয়ার এক সপ্তাহ পর পরিবারের সদস্যরা মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করেন।
ঘটনার পর রহিমার মা সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে ৫ জনকে এজাহারনামীয় আসামি এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি জসিম উদ্দিন ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন।
র্যাব-১৫ ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামির অবস্থান শনাক্ত করে ১ ডিসেম্বর রাতে র্যাব-১৫, র্যাব-৭ ও স্থানীয় সোর্সের সমন্বয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
Google News গুগল নিউজে প্রতিদিনের বাংলাদেশ”র খবর পড়তে ফলো করুন
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জসিম তার স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলা পারিবারিক কলহের জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা স্বীকার করেছে। র্যাব জানায়, সহযোগী মোবারকের সাহায্যে নির্জন স্থানে নিয়ে গলা কেটে রহিমাকে হত্যা করা হয়। পরে লাশটি মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।
পরদিন এলাকাবাসী রক্ত দেখতে পেলে জসিম মৃত গরুর লাশ পুঁতে রাখার গল্প রটিয়ে বিষয়টি আড়ালের চেষ্টা করে। সন্দেহ বাড়তে থাকলে রাতে মরদেহ তুলে বস্তায় ভরে তচ্ছাখালী খালে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার ও সহকারী পরিচালক (ল’ অ্যান্ড মিডিয়া অফিসার) আ. ম. ফারুক বলেন,‘উখিয়ার তচ্ছাখালী খাল থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় র্যাব-১৫ শুরু থেকেই গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্তে নেয়। তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে আমরা দ্রুত মূল আসামিকে শনাক্ত করি। দীর্ঘদিন পলাতক থাকা সত্ত্বেও আমাদের অভিযানিক দল চট্টগ্রামের বোয়ালখালী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, হত্যার বিবরণ এবং মরদেহ গোপনের চেষ্টা সম্পর্কে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। র্যাব-১৫ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্তে সর্বদা বদ্ধপরিকর। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।