প্রকাশিত: ১৮/১২/২০২১ ২:০৪ পিএম

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে ‘সন্ত্রাসীর’ গুলিতে নিহত রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিব উল্লাহর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ডরুজ।

শুক্রবার দুপুরে উখিয়ার ট্রানজিট পয়েন্টে তাদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এসময় তিনি সেই রাতে ঘটে যাওয়া হত্যার লোমহর্ষক বিবরণ শোনেন পরিবারের কাছ থেকে। এ ছাড়া উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির এবং নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম কোনারপাড়া নো ম্যানস ল্যান্ড রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন টম অ্যান্ডরুজ।

এর আগে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরেজমিনে অবগত হতে সোমবার বাংলাদেশে পৌঁছেছেন তিনি। এক সপ্তাহের সফরে তিনি বাংলাদেশে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক ছাড়াও কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন বলে জানানো হয়েছে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

এদিকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর শীর্ষস্থানীয় নেতা মুহিব উল্লাহকে হত্যার এক মাস পর তার পরিবারসহ স্বজনদের ক্যাম্প থেকে অন্যত্র সরিয়ে উখিয়ার ট্রানজিট পয়েন্টে তাদের রাখা হয়। তবে সেখানে আগে থেকে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা খ্রিস্টানদেরও ফোন করে খোঁজ খবর নেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার নেতা পিটার।

এ বিষয়ে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) নেতা ও মুহিব উল্লাহর ছোট ভাই হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ডরুজসহ একটি দল এখানে আসেন। এতে মুহিব উল্লাহর স্ত্রী ও তার সন্তানদের খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি সেদিন মুহিব উল্লাহকে কীভাবে হত্যা করা হয় সে বিষয়ে বর্ণনা শোনেন এবং মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার কারণ ও বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি ক্যাম্প ছেড়ে বর্তমানে উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্টে কেমন জীবন যাপন কেমন কাটছে সে বিষয়ে বলা হয়।’

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) প্রতিনিধি ও কুতুপালং নিবন্ধিত ক্যাম্প-ইনচার্জ (উপ সচিব) রাশেদুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে বিশেষ দূত টম অ্যান্ডরুজ ক্যাম্প পরিদর্শন করছেন। এ সময় তিনি উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির এবং নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম কোনারপাড়া নো মেনস ল্যান্ড রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্ট মুহিব উল্লাহর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছে। তবে সেখানে কি কথা হয়েছে তা জানি না।

এর আগে ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে মিয়ানমারের বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ইয়াংহি লি। বারবার অনুমতি চাইলেও মিয়ানমারে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি, মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বৈঠকও করতে পারেননি। তবে তিনি কয়েক দফা বাংলাদেশ সফর করে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের সেনাদের অভিযান থেকে প্রাণে বাঁচতে দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাস করছেন। এদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নৃশংস অভিযানের সময়ে পালিয়ে এসেছিলেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার। বর্তমানে সেখানে প্রায় ২০ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছেন।

পাঠকের মতামত

১৫০ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে ২৮৫ সেনাকে নিয়ে ফিরবে মিয়ানমারের জাহাজ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জা‌নি‌য়ে‌ছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ২৮৫ ...

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...