শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মুক্তিযুদ্ধে বার্মায় বাঙালি শরণার্থীদের ‘সন্দেহজনক অস্ত্রধারী’ হিসেবে বিবেচনা করা হতো
প্রকাশিত - ডিসেম্বর ১, ২০১৭ ৯:৫৩ এএম

ইরফানুল হক::

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের বর্বরতার মুখে মূলতঃ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঙালিরা বার্মায় পালিয়ে আসে। বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের জুন মাসের এক বিবৃতি হতে জানা যায়, বার্মায় বাঙালি শরণার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ হাজার। আনন্দবাজার পত্রিকার একটি রিপোর্ট (জুলাই ২২, ১৯৭১) 'পূর্ব বাঙলার বিপন্ন বৌদ্ধেরা' অনুসারে, এই শরণার্থীদের ২০ হাজার ছিল বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীর।
বাঙালি শরণার্থী বিষয়ে বার্মার অসহযোগিতা বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভায় (জুলাই ৩১, ১৯৭১) শ্রী সুন্দর সিংহ ভান্ডারী তাঁর বক্তৃতায় জানান, বাঙালি শরণার্থীরা বার্মা নয়, ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করছে।
বাঙালি শরণার্থীদের 'সন্দেহজনক অস্ত্রধারী' হিসেবে বিবেচনা করা হতো বার্মায়। বার্মার বলিবাজার, সাববাজার, নাখোরা, টংব্রু, ঢেকিবনিয়া এলাকা হতে বাঙালি শরণার্থীদের এনে মংডু'র চারমাইল এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে গ্যাটো বানিয়ে করে রাখা হয়। শরণার্থীদের ক্যাম্প হতে বের হওয়া ছিল নিষিদ্ধ।
খাদ্য, চিকিৎসার কোন সরকারি ব্যবস্থা সেখানে ছিল না। বার্মায় বাঙালি শরণার্থীদের জীবন ছিল বন্দী, নির্মম। এই দুঃসহ পরিস্থিতি সইতে না পেরে কেউ কেউ আরাকানের জঙ্গলে পালিয়ে যান।
বার্মায় বাঙালি শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র ফুটে উঠেছে ড. আনিসুজ্জামানকে লেখা বার্মায় আশ্রয় নেয়া ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংসদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আওয়ালের একটি চিঠিতে।
বাঁচার জন্য পালিয়ে বার্মা আসলে আওয়ালসহ অনেককেই বার্মার পুলিশ গ্রেফতার করে গ্যাটো শরণার্থী শিবিরে বন্দী করে রাখে। সেখানে খাবার ছিল অপ্রতুল, পানির জন্য বৃষ্টির অপেক্ষা করতে হতো, বাইরের জগতের সাথে কোন যোগাযোগ ছিল না। সুত্র: প্রিয় ডটকম
তথ্যসূত্র: (মুক্তিযুদ্ধে বার্মার ভূমিকা-সাব্বির হোসাইন, মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ ট্রাস্ট)
Copyright © 2025 UkhiyaNews.Com. All rights reserved.