প্রকাশিত: ০৮/১২/২০২১ ৬:২৩ পিএম

মেটা ইতোমধ্যে সামরিক নিয়ন্ত্রিত ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ১০০টিরও বেশি অ্যাকাউন্ট, পেজ এবং গ্রুপ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে নিয়েছে

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত সমস্ত ব্যবসাকে প্রতিটি নিজেদের সব নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে মেটা প্ল্যাটফর্ম ইনকর্পোরেটেড।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার (৮ ডিসেম্বর) পূর্বে ফেসবুক নামে পরিচিত প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে তারা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর করা আগের নিষেধাজ্ঞা সম্প্রসারণের কারণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই মার্কিন টেক জায়ান্ট এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা করেছিল, তাতমাদাওয়ের (মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর অফিসিয়াল নাম) সঙ্গে যুক্ত সমস্ত সংস্থার বিজ্ঞাপন ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে দেওয়া বন্ধ করবে।

মেটা’র প্যাসিফিক ডিরেক্টর রাফায়েল ফ্র্যাঙ্কেল বলেন, “এই পদক্ষেপটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং সুশীল সমাজের ব্যাপক ডকুমেন্টেশনের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে, যা তাতমাদাও-কে অর্থায়নে সরাসরি ভূমিকা রাখে।”

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটে। যার ফলে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভের সূচনা হয়।

ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখলের পর সামরিক জান্তা মিয়ানমারে ফেসবুককে নিষিদ্ধ করেছিল।

ফ্র্যাঙ্কেল বলেন, “মিয়ানমারের ওপর জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের অধীনে করা ২০১৯ সালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ জাস্টিস ফর মিয়ানমার এবং বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকে-এর গবেষণা, সেইসঙ্গে সুশীল সমাজের সঙ্গে পরামর্শের ভিত্তিতে এ ধরনের কোম্পানিগুলো চিহ্নিত করছে মেটা।”

তিনি রয়টার্সকে আরও বলেন, “মেটা ইতোমধ্যে সামরিক নিয়ন্ত্রিত ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ১০০টিরও বেশি অ্যাকাউন্ট, পেজ এবং গ্রুপ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে নিয়েছে।”

মিয়ানমারে প্রভাবশালী ইন্টারনেট চ্যানেল হিসেবে ফেসবুক একটি বড় ভূমিকা পালন করে আসছে। সামরিক শাসন এবং সৈন্যদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীরা উভয়ই ফেসবুক ব্যবহারে সক্রিয়।

প্ল্যাটফর্মটি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছ থেকে ১৫০ বিলিয়ন ডলারের মামলারও সম্মুখীন হয়েছে শুধুমাত্র এই অভিযোগে যে, ফেসবুক সহিংসতা ও মুসলিম রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে ঘৃণামূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।

২০১৮ সালে, জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্তকারীরা বলেছিলেন, ফেসবুক উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী এবং সামরিক সদস্যদের দ্বারা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সহিংসতার প্রচারণা চালানোর জন্য তাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে।

ফ্র্যাঙ্কেল মামলার বিষয়ে মন্তব্য না করলেও বলেন, “মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ দেখে আমরা আতঙ্কিত। আমরা বার্মিজ স্পিকারদের একটি ডেডিকেটেড টিম তৈরি করেছি, তাতমাদও-কে নিষিদ্ধ করেছি, জনসাধারণের বিতর্কে হেরফেরকারী নেটওয়ার্কগুলো ব্যাহত করেছি এবং মানুষকে নিরাপদ রাখতে সাহায্য করার জন্য ক্ষতিকর ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।

পাঠকের মতামত