
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ২৩ জানুয়ারি বিকেল তিনটায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলায় জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাচ্ছে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া ১১ নভেম্বর আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মামলা করে। মিয়ানমার গণহত্যা, ধর্ষণ এবং সম্প্রদায় ধ্বংসের মাধ্যমে “রোহিঙ্গাদের একটি দল হিসাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে” “গণহত্যামূলক কাজ” করেছে বলে অভিযোগ করে মামলায়।
গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার শুনানির জন্য ১০ ডিসেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারিখ নির্ধারণ করা হয়। প্রথম ধাপে ১০ ডিসেম্বর শুনানি করে গাম্বিয়া। আর ১১ ডিসেম্বর শুনানি করে মিয়ানমার। এ শুনানির পর মিয়ানমার এ ইস্যুতে কী করবে তা জানাচ্ছে আইসিজে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী নৃশংস নির্যাতন চালায়। নৃশংসতা থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। বিগত তিন দশক ধরে মিয়ানমার এই জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
এর সূত্র ধরে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া মিয়ানমারের এই হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করে এবং এর বিচার চেয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) ‘গণহত্যা’র মামলা করে।
মামলার ৪৫ পৃষ্ঠার আবেদনে গাম্বিয়া উল্লেখ করে, মিয়ানমার গণহত্যা, ধর্ষণ এবং সম্প্রদায় ধ্বংসের মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গাদের ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে’ ‘গণহত্যা’ চালায়।
শুনানির তৃতীয় দিনে গাম্বিয়ার পক্ষের আইনজীবী পিয়েঁর দ্য আর্জেন বলেন ওআইসির সিদ্ধান্তে গাম্বিয়া মামলা করেছে—কথাটি ঠিক নয়। এর আগে মিয়ানমার পক্ষের আইনজীবী ক্রিস্টোফার স্টকার দাবি করেন, ওআইসির মদদে গাম্বিয়া গণহত্যার মামলা করেছে।
এসময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি বলেন, আরাকানে কোনো গণহত্যা ঘটেনি, সেখানে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লড়াই করছে সে দেশের সেনাবাহিনী।
তবে এ মামলার পক্ষে কথা বলছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। বিশেষ করে দেশটির বিদ্রোহী কারেন জনগোষ্ঠী গাম্বিয়ার এ মামলাকে স্বাগত জানিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না তা তদন্তের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)৷ তবে মিয়ানমার বলছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের এ উদ্যোগ কোনোভাবেই আইনসঙ্গত নয়৷ কারণ মিয়ানমার এখনও আইসিসি সনদে স্বাক্ষর করেনি, তাই দেশটি এ ট্রাইব্যুনালের সদস্যও নয়৷ কিন্তু আইসিসি বলছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া বাংলাদেশ সংস্থাটির সদস্য হওয়ায় এ তদন্তের এখতিয়ার তাদের রয়েছে।
পাঠকের মতামত