ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০২/০২/২০২৩ ১১:৩৪ এএম

মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা অনুষদের ছাত্র হোস্টেলের একটি কক্ষ থেকে এক ছাত্রীকে আটক করা হয়েছে। পাশের আরেকটি কক্ষ থেকে কয়েক গ্রাম গাঁজা জব্দ করা হয়।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১২টায় চারুকলা অনুষদে পুলিশ নিয়ে অভিযান চালায় প্রক্টরিয়াল বডি। এসময় শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলের ১০৫ নম্বর কক্ষ থেকে ইনস্টিটিউটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে আটক করা হয়।

জানা গেছে, ওই ছাত্রী কোনোরূপ অনুমতি ছাড়াই ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করছিলেন। নিয়মানুযায়ী হোস্টেল ওয়ার্ডেনের অনুমতি ছাড়া রাতে কিংবা দিনে কোনো সময়ই ছাত্রীরা ছাত্রদের হোস্টেলে প্রবেশ করতে পারবেন না। আটকের পরে ওই ছাত্রী আর এভাবে অবস্থান করবেন না মর্মে মুচলেকা দিলে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাছাড়া হলের ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে কয়েক গ্রাম গাঁজাও জব্দ করা হয়। তবে এ ঘটনায় কাওকে আটক করা হয়নি।

মূলত দীর্ঘদিন থেকে চলমান অচলাবস্থার কারণে আন্দোলন নিয়ে চারুকলা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। একপক্ষ প্রশাসনের দাবি মেনে নিয়ে ক্লাস করতে চাইলেও অন্যপক্ষ মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবি না মানলে আমরণ অনশনের হুমকি দেয়। এসময় উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কায় পুলিশ নিয়ে অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছেন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা।

তবে বিষয়টিকে সাজানো এবং আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের ষড়যন্ত্র বলছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ। তাদের দাবি, ওই ছাত্রী ইনস্টিটিউটের সামনে অবস্থান করছিলেন। পুলিশের গাড়ি ইনস্টিটিউটে প্রবেশ করতে দেখলে ভয় পেয়ে তিনি ছাত্র হোস্টেলে ঢুকে পড়েন।

এ বিষয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুসময় বড়ুয়া বলেন, আগে থেকে অবস্থান করছিলেন, এই অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের এক জুনিয়র মেয়েকে রিসিভ করে তার বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের বান্ধবী হোস্টেলের সামনে অবস্থান করছিলেন। এসময় হুট করেই পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি প্রবেশ করে সবাইকে যার যার রুমে চলে যেতে বলেন। এতে আমাদের বান্ধবী ভয় পেয়ে সামনে যে রুমটি পেয়েছে সে রুমেই ঢুকে পড়েন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, অভিযান চলাকালে ছাত্রদের হোস্টেলের একটি কক্ষ থেকে এক ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আমরা স্বল্প পরিমাণ গাঁজা ও বহিরাগত এক যুবকের মোবাইল ফোন জব্দ করেছি।

গতবছরের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাসবর্জন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি পরিবর্তন করে হঠাৎ মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দফা এক দাবিতে রূপ নেয় আন্দোলন। টানা ৮২ দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ইনস্টিটিউট অবরুদ্ধ রাখার পর গত ২৩ জানুয়ারি শর্তসাপেক্ষে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তারা। কিন্তু শর্তপূরণে কোনো দৃশ্যমান কাজ চোখে না পড়ায় ৩১ জানুয়ারি থেকে ফের ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। অবস্থান কর্মসূচি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি আমরণ অনশনের হুমকিও দেওয়া হয়।

পাঠকের মতামত