কক্সবাজারে বাল্যবিবাহের হার জাতীয় গড়ের তুলনায় এখনও বেশি এবং এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে শিশুদের ফেইসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার।
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু সুরক্ষা নেট প্রকল্পের আওতায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান “সেন্টার ফর কোয়ালিটেটিভ রিসার্চ” পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। জরিপটি কক্সবাজারের সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় পরিচালিত হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, জাতীয়ভাবে বাল্যবিবাহের হার যেখানে ৫১%, সেখানে কক্সবাজারে এই হার ৫৮%। এরমধ্যে ১৯-৪৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে এ হার ৫৫%। তবে ১৯-২৪ বছর বয়সী তরুণীদের ক্ষেত্রে এ হার আরও উদ্বেগজনক—৬৯%।
তথ্য বলছে, জেলার ৪০% কিশোর-কিশোরী সমবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং অনেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে, যা শেষ পর্যন্ত বাল্যবিবাহে পরিণত হয়। উপজেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যানে উখিয়া ও টেকনাফে এ হার ৪৫%, আর সবচেয়ে কম কক্সবাজার সদরে, মাত্র ২৬.২%।
সমবয়সীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠার পেছনে মূলত ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বেশি হওয়াকেই কারন হিসেবে বলছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মো: মাহবুবুল ইসলাম ভূঁইয়া।
মি. ভূঁইয়া বলেন,”সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অতিরিক্ত সময় কাটানোর ফলে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আগ্রহ সময়ের আগেই বেড়ে যায়। প্রযুক্তি নির্ভর বর্তমান সমাজে এ প্রবণতা আরও তীব্র হচ্ছে”।
“যথাযথ দিকনির্দেশনা ও উপযুক্ত শিক্ষার ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক কিশোর-কিশোরীদের জন্য একধরনের ‘ভবিষ্যতের দরজা’ হতে পারে” বলেন এই গবেষক।
এছাড়া বাল্যবিবাহের অন্যান্য কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে দারিদ্র্যতা, শিক্ষার অভাব ও সামাজিক কুসংস্কার। জরিপ অনুযায়ী, জেলার ২৫% বাল্যবিবাহ ঘটছে দারিদ্র্য ও শিক্ষা অভাবে, আর ২৩% ক্ষেত্রে এটি সমাজে প্রচলিত “প্রথা” হিসেবে বিবেচনায় সম্পন্ন হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওয়ার্ল্ড ভিশনের এই পরিসংখ্যান কক্সবাজারের নারী উন্নয়ন, শিশু সুরক্ষা এবং সামাজিক বাস্তবতা বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে. সুত্র, টিটিএন