নিউজ ডেস্ক ::
পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন এবং ত্রাণ বিতরণ করতে রাঙামাটি যাওয়ার পথে রোববার সকালে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় হামলার শিকার হয়েছেন বিএনপি প্রতিনিধিদলের গাড়িবহর। হামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের পাঁচ শীর্ষ নেতা আহত হয়েছেন।
ভাঙচুর করা হয়েছে পাঁচটি গাড়ি। সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইছাখালী এলাকায় ওই হামলা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরাও ছিল। পরিচয় প্রকাশ করা হবে না—এমন শর্তে উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতাই হামলার কথা স্বীকার করেছেন। এমনকি বিএনপি নেতা আমির খসরু ঘটনার পরই সংবাদ কর্মীদের বলেছেন, সরকার দলীয় স্থানীয় এমপি ড. হাছান মাহমুদের ক্যাডার বাহিনীই তাদের গাড়ি বহরে হামলা চালিয়েছে।
ঘটনার পর ওই বহরে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, রাঙ্গুনিয়ার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদের লোকজন হামলা করেছে। তবে হাছান মাহমুদ দাবি করেছেন, বিএনপি নেতাদের গাড়ির ধাক্কায় দুজন আহত হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
হামলার ঘটনার পর সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সেখানে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়। হামলায় অংশ নেওয়া স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতা হামলার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। হামলার ভিডিওচিত্রেও তাঁকে ঘটনাস্থলে মিছিলে করতে দেখা গেছে। তবে তিনিসহ হামলায় জড়িত তাঁর অন্য সহযোগীদের নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান তিনি।
ছাত্রলীগের ওই নেতার ভাষ্যমতে, ‘আমরা সকাল থেকেই ১৫ জনের মতো নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছিলাম। সামনেই ইট ও লাঠি রাখা ছিল। এমনিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অটোরিকশার জটলা থাকে। বিএনপি নেতাদের গাড়িবহর এখানে পৌঁছলে গতি শ্লথ হবে ভেবেই সেখানে অবস্থান নিই আমরা। সকাল সোয়া ১০টার পর দেখি ১৫-১৬টি গাড়ির বহর নিয়ে মির্জা ফখরুল কাপ্তাইয়ের দিকে যাচ্ছেন। গাড়ির বহর অটোরিকশার জটলায় পড়ে শ্লথ হয়ে যায়। প্রথম গাড়িটি ছিল একটি মাইক্রোবাস। তাতে বসা ছিলেন কাপ্তাই উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা দিলদার হোসেনসহ কয়েকজন। তাঁদের দেখেই আমরা চিনতে পারি। তাঁদের অনুরোধ করি, সামনে না গিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে নিতে। প্রথম রাজি হননি তাঁরা। পরে ধমক দিতে হয়েছে। ওই গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়ার পর মির্জা ফখরুলকে বহনকারী কালো রঙের পাজেরো গাড়িটি সামনে পড়ে। গাড়ির কাচ নামিয়ে কথা বলতে চান মির্জা ফখরুল। আমরা তাঁকে অনুরোধ করি ফিরে যেতে। কিন্তু তিনি কড়া ভাষায় বলেন, ‘আমি যাব, আমাকে ফিরিয়ে দেবে তোমরা কারা?’ আমরা আবারও অনুরোধ করি, রাঙামাটি বা কাপ্তাই নয়, চট্টগ্রামে ফিরে যান। কিন্তু তিনি গো ধরে বলেন, ‘আমি যাবই যাব, দেখি আমাকে কে বাধা দেয়। ’ এ কথা শুনেই মাথা গরম হয়ে যায়। কিভাবে যান দেখি—বলেই নেতাকর্মীরা ইট ও লাঠি নিয়ে গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। আমরা ১৫ জনেই কাজ শেষ করে দিয়েছি। সামনের দিকের গাড়িগুলোতে ভাঙচুর শুরুর পর পেছনের গাড়িগুলোর আরোহীরা ভয়ে নিজ থেকেই উল্টোপথে চট্টগ্রামমুখী পথ ধরে। গাড়িগুলো চলে যাওয়ার পর আমরা মিছিল করি। এই সময় পুলিশের একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে। ততক্ষণে কাজ শেষ। ’