সংবিধান সংশোধন সংসদের বাইরে হতে পারে না উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জাতির কাছে এমন কোনো নির্দশন রেখে যাওয়া ঠিক হবে না যা দুদিন পর টিকবে না। নির্বাচন অনিশ্চয়তায় পড়লে আঞ্চলিক ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে শুরু হওয়া বৈঠকে বক্তব্যের শুরুতেই সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই সবকিছু সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। ঐক্যমত কমিশনের কাজও শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কিছু রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়—যদি এর কোনো আইনি ভিত্তি না থাকে তবে তারা এই সনদে স্বাক্ষর করতে পারব কি না চিন্তা করতে হবে। তখন আমরা বলেছি, আসুন আলোচনা করি—কীভাবে এটিকে আইনি ভিত্তি দেয়া যায়। পরবর্তীতে আলোচনা শুরু হলো। তার আগেই বিশেষজ্ঞ মতামত নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, সংবিধানের উপরে সনদকে স্থান দেয়া যাবে না। সংবিধানের সংশোধনী আনার জন্য এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার বা আইনি পন্থার বাইরে গিয়ে সনদ বাস্তবায়ন চায় না বিএনপি।’
‘আমরা বলেছি, সনদে স্বাক্ষর হয়ে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হোক, অনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হোক, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে উল্লেখ থাকুক—এভাবেই জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া যায়। যারা ম্যান্ডেট পাবে, তারা সংসদে গিয়ে বাধ্য থাকবে এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অনুগত থাকতে’, যোগ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, তবে যদি প্রশ্ন আসে—গ্যারান্টি কোথায়? সেজন্যই আমরা বলেছি আইনি ভিত্তি থাকা দরকার। চাইলে অ্যাপিলেট ডিভিশনের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ হলেও বলা যাবে—বিচার বিভাগের পরামর্শ নেয়া হয়েছিল।
‘আমরা শুধু চাই—অনিশ্চয়তা কেটে যাক। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এগুলোকে কখনোই একে অপরের সঙ্গে শর্তসাপেক্ষ করা যাবে না। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, বিচারও চলবে। অবিচারের শিকার আমরা সবচেয়ে বেশি হয়েছি। কিন্তু নির্বাচনের সঙ্গে এসবকে যুক্ত করলে সেটা জাতির জন্য ক্ষতিকর হবে’, বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশের নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে হবে। এ নিয়ে যদি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, তবে সেটা গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং জাতীয় এমনকি আঞ্চলিক নিরাপত্তার হুমকি তৈরি করতে পারে। আমরা বাংলাদেশকে সে অবস্থায় নিতে চাই না।’