প্রকাশিত: ০১/০৭/২০২১ ৯:১৮ এএম

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল (সিটিটিসি) সদস্যরা রাজধানীর রামপুরা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্যকে গ্রেফতারের পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চিহ্নিত কয়েকজন মাঝি ও পুরনো রোহিঙ্গা নেতাদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের শেষের দিকে লাখে লাখে রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে উখিয়া টেকনাফে আশ্রয় নেয়। এসময় কে কখন কোথায় এবং কাকে সাহায্য দিচ্ছিল, তার কোন হিসাব বা তদারকি ছিল না। ওই সময় মানবিক অনুদান প্রদান ও সাহায্য দেয়ার নামে আনসার আল ইসলাম রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রবেশ করেছিল। সে সুযোগে রোহিঙ্গা কর্মী সংগ্রহ এবং দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে তারা। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব অর্পণ করার পর প্রতিটি ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণের একটা শৃঙ্খলা ফিরে আসে। ২০১৭ নালে মানবতার দোহাই দিয়ে সাহায্যের আড়ালে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উগ্রবাদ ছড়িয়েছে আনসার আল ইসলামসহ একাধিক জঙ্গী সংগঠন। এর আগে টেকনাফ ও উখিয়ার দুটি শিবিরে রোহিঙ্গার সংখ্যা ছিল তুলনামূলকভাবে কম। ১৯৯২ সাল থেকেই বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী স্টাইলে গড়ে তুলেছে একাধিক উগ্রপন্থী সংগঠন। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ-সাহায্য দেয়ার নামে সক্রিয় ছিল আনসার আল ইসলাম। শিবিরে রোহিঙ্গাদের উগ্রবাদ মতাদর্শ প্রচার ও উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টায় অবস্থানকরা আনসার আল ইসলাম সদস্য মারুফ চৌধুরী মিশু ওরফে ফারহানের সঙ্গে কিছু হেড মাঝি ও পুরনো কতিপয় রোহিঙ্গা নেতার সহযোগিতা ছিল বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা বলেন, আমরা শুধু রোহিঙ্গাদের পর্দার সামনেরটা দেখি। অন্তরালে পেছনে গল্প শুনলে পিলে চমকে উঠার মতো কাহিনীও রয়েছে রোহিঙ্গাদের। তাদের মধ্যে রয়েছে একটি অংশ ভয়ঙ্কর।

রোহিঙ্গারা প্রথমে তাদের অসহায়ত্বের কথা বলে আশ্রয় খুঁজে। স্থান পাবার পর তাদের পুরনো নেতাদের (এনআইডিধারী) সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে বিভিন্ন উগ্রবাদী সংগঠনে যোগ দেয়। জাতীয় সনদধারী কিছু রোহিঙ্গা নেতা বিদেশে সাহায্য আনতে দাবি করে নিজেই রোহিঙ্গা। তবে বাংলাদেশে পা রাখার পর দাবি করে থাকে তারা বাংলাদেশী। এই রোহিঙ্গারা খোলস পাল্টাতে পারে যখন তখন।

আরএসও, আলইয়াকিন নামে সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শতাধিক রোহিঙ্গা ও অন্তত ১২ জনের বেশি বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যা করেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে বহু অস্ত্র উদ্ধার ও রোহিঙ্গা ডাকাতদের গ্রেফতার করেছে। কক্সবাজার, রামু, উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও সাতকানিয়াতে গড়ে তোলা হয়েছে মাদ্রাসা ও এতিমখানার নামে বহু রোহিঙ্গা প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠান। যদিও দ্বীনি শিক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়ে থাকে, তবে রাতের বেলায় রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন গেরিলা প্রশিক্ষণ দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ওইসব মাদ্রাসায় বেশীর ভাগই এনআইডিধারী রোহিঙ্গা শিক্ষক ও আশ্রয় ক্যাম্পের বাইরে অভ্যন্তরে থাকা রোহিঙ্গা ছাত্র।

সম্প্রতি ঢাকায় গ্রেফতার হওয়া জঙ্গী আনসার আল ইসলাম সদস্য মারুফ চৌধুরী মিশু ওরফে ফারহানের সঙ্গে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত রোহিঙ্গা মাদ্রাসা প্রধান ও জাতীয় সনদধারী রোহিঙ্গা নেতা ইদ্রিছ জিহাদী, শায়খ ছালামত উল্লাহ, মৌলবি আয়াজ, মৌলবি শফিক (দাঁড়ি বিহীন) হাফেজ হাসিম, মৌলবি আবু ছালেহ, নূর হোসাইন, মাস্টার আয়ুব, এনায়েত, রুহুল আমিন, আবু সিদ্দিক ও হাফেজ ছলাহুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। রাজধানীর রামপুরা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্যকে গ্রেফতারের পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চিহ্নিত কয়েকজন মাঝি ও পুরনো রোহিঙ্গা নেতাদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...