উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ২৬/০৯/২০২২ ১১:৫০ এএম , আপডেট: ২৯/০৯/২০২২ ৯:৫৪ এএম

বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বরইতলী-মংজয় পাড়া গ্রাম থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পূর্বে তিনটি প্রকৃতিক ঝর্ণার সন্ধান মিলেছে। এই ট্রেইলটিকে বরইতলী ট্রেইল (Boroitoli Trail) বলা হয় যা অনেকের কাছে বরইতলী ফাত্রাঝিরি ঝর্ণা নামেও পরিচিত। বরইতলী, মংজয় পাড়া গ্রামের পূর্বপ্রান্তে রয়েছে ফৈরাঙধং পাহাড়, তুলাতুলী পাহাড় এবং জামতলী পাহাড়। আর এই পাহাড় গুলোর পাদমূল থেকে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছরা ও ঝিরি ঝর্ণা। আঁকাবাঁকা ভালুকিয়া খাল, ঝিরিপথ, পাললিক শিলা, উঁচু-নিচু পাহাড়, সবুজ গাছপালা নিয়ে নয়নাভিরাম এক প্রাকৃতিক দৃশ্য, যা বরইতলী ট্রেইলকে করেছে আকর্ষনীয় এবং রোমাঞ্চকর।

বরইতলী ট্রেইলে রয়েছে তিনটি প্রধান ঝর্ণা। প্রথমে ছোট ছোট দুইটি পৃথক ঝর্না (নিঝুম ঝর্ণা) এবং পরেরটি একটি বড় ঝর্ণা। তবে বড় ঝর্ণাটিই ভ্রমণকারীদের প্রধান আকর্ষন। এটি অনেকের কাছে মুরং ঝর্ণা আবার কারও কাছে ত্রিমুখী ঝর্ণা নামেও পরিচিত। ঝর্ণার পরশে হিমশীতলতায় প্রান জুড়িয়ে যায়। ত্রিমুখী ঝর্ণা হওয়ায় এর আকর্ষন ও সৌন্দর্য বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।

ভ্রমণের সেরা সময়
বর্ষাকালে ঝর্ণারা প্রাণ ফিরে পায়। তাই বর্ষাকালই ঝর্ণা দর্শনের সেরা সময়। কিন্তু এসময় কিছু জিনিস প্রতিকুল হয়ে যায়। এদের মধ্যে আছেঃ ট্রেইল পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া, ঝিরিপথে ফ্লাশ ফ্ল্যাডের সম্ভাবনা, পাহাড়ি এলাকায় ধ্বস এর ঝুকি বেড়ে যায়।

বরইতলী ট্রেইল যাওয়ার উপায়
কক্সবাজার থেকে কাছে হওয়ায় কক্সবাজার থেকেই ভ্রমণ করা সহজ। কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে উখিয়া যায় এরকম মিনিবাস পাবেন। মিনিবাসে করে উখিয়ার আগে মরিচ্যায় নেমে যান (বাসের হেল্পারকে বললেই নামিয়ে দিবে) ভাড়া ৩০ টাকা অথবা সিনএনজি নিয়েও যেতে পারেন ভাড়া জনপ্রতি ৬০ টাকা। মরিচ্যা বাজারে নেমে প্রয়োজনীয় খাবার,পানি, ডেটল,ব্যান্ডেজ এগুলো কিনে নিন। মরিচ্যা বাজার রোডের বাম পাশে একটা বড় শিশুগাছ দেখতে পাবেন (স্থানীয় ভাষায় ঘুমগাছতলা বললেই দেখিয়ে দিবে)। শিশু গাছটির পাশ দিয়ে চলে গেছে পাকা সড়ক। সড়কটির মুখেই পাবেন ইজি বাইক এবং সিএনজি। ড্রাইভারের সাথে কথা বলবেন বরইতলী-মংজয় পাড়া-লেবু বাগান ভাবনা কেন্দ্রের সামনে নামবেন। দরদাম ঠিক করে নিবেন। প্রতি ইজিবাইক ১৫০-২০০ টাকা এবং প্রতি সিএনজি ১৫০-২৫০ টাকা নিবে। যে গাইডের সাথে যোগাযোগ করবেন তাকে ভাবনা কেন্দ্রের সামনে অপেক্ষা করতে বলবেন। ইজি বাইক আপনাদের ভাবনা কেন্দ্রের সামনে নামিয়ে দিবে।

ভাবনা কেন্দ্রের পাশ দিয়ে চলে গেছে কাঁচা সড়ক। প্রথমদিকে খুবই কাদাযুক্ত পথ এবং পথের দুইদিকে লেবু বাগান। লেবু বাগান ফেলে পাহাড়ি পথ ছেড়ে নেমে যাবেন ঝিরিপথে। ঝিরিপথ দিয়ে স্রোতের বিপরীতে হাটতে হবে ২ ঘন্টার মতো। পথ চলতে দিয়ে দেখা পাবেন জুম চাষ, জাম্বুরা বাগান, পেয়ারা বাগান, কলা বাগান, আম বাগান। ২ ঘন্টা হাটার পর দেখবেন ঝিরিপথটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। হাতের ডান পাশে গেলে দেখা পাবেন প্রথম ঝর্ণার। অন্য পথে দেখা পাবেন সবচেয়ে বড় ঝর্ণাটির। বরইতলী ট্রেইলটির বিশেষত্ব হলো, যে পাশ দিয়ে ঝর্ণায় ঢুকবেন ঐ দিক ছাড়া বাকি তিনটি দিকে দিয়ে নেমে এসেছে তিনটি ঝর্ণা। বামে, ডানে এবং সামনে। স্থানীয়দের মতে, আনুমানিক ১০টির অধিক ছোট বড় ঝর্ণা রয়েছে আশেপাশের জায়গা জুড়ে।

সাথে নিতে পারেন যা

ট্যুর গাইড হিসেবে স্থানীয় একজন সাথে নিয়ে গেলে ভালো হয়। প্রয়োজন মত শুকনা খাবার, পানি, লাঠি, কাপড় ইত্যাদি

পাঠকের মতামত