প্রকাশিত: ১৮/০৭/২০২২ ১০:১৫ এএম

মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া ::
আসিফ ইকবাল। বাড়ি চকরিয়া পৌরশহরে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এলাকায় থাকলেও চাকুরীর কারণে চট্টগ্রামে থাকতে হয় আসিফকে। ঈদে উপলক্ষে বাড়িতে এসেছেন। ঈদে চকরিয়ার বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করেছেন স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে।

বুধবার বিকালে স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ডুলাহাজারাস্থ রেললাইনের স্টেশন ও রেললাইন দেখতে এসেছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছবি তুলছেন। রেল কীভাবে চলবে এসব খুটিনাটি বিষয়গুলো পরিবারের সদস্যদের বুঝাচ্ছেন।

এসময় সময় কথা হয় আসিফ ইকবালের সাথে। তিনি বলেন, কখনও চিন্তা করিনি কক্সবাজারের এদিকে রেললাইন আসবে। রেলে চড়ে চট্টগ্রামসহ দেশের নানা প্রান্তে যাবো কল্পনাও করিনি। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সুযোগ করে দিয়েছেন। আশা করছি শীঘ্রই রেলে চড়বো।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চকরিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, নিভৃত নিসর্গ পার্কসহ আরও বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে।

ঈদ উপলক্ষ্যে সেসব স্থানগুলোতে দর্শনার্থীর আগমন তেমন চোখে না পড়লেও রেললাইন দেখতে এসেছে হাজার হাজার দর্শনার্থী। ছোট শিশু থেকে বয়স্করা পর্যন্ত বাদ যায়নি রেললাইন দেখা থেকে। তারা রেললাইনে বসে ছবি তুলছেন। কেউ রেললাইনের খুটিনাটি বিষয় নিয়ে গবেষণা করছে। কেউ কেউ সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিচ্ছেন। আবার অনেকে টিকটকও বানাচ্ছেন।

প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থী আসছে রেললাইন দেখতে। রেললাইন দেখতে আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে একধরনের আনন্দের হিল্লোল বইছে। রেললাইন চালু হলে না জানি তাদের মধ্যে কি ধরনের অনুভুতি কাজ করবে !

আবুল হোসেন। বয়স আনুমানিক ৬৫ হবে। তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখেছেন। তবে, কখনও ভাবেননি চকরিয়ার উপর দিয়ে রেল চলবে। পরিবারের সদস্যরা যখন রেললাইন দেখতে আসছিলেন তিনিও বায়না ধরেছিলেন রেললাইন দেখতে আসার। বয়োবৃদ্ধ বাবার কথা ফেলতে পারেননি ছেলে জয়নাল। তাই বয়োবৃদ্ধ বাবাকেও নিয়ে এসেছেন রেললাইন দেখতে আসতে পেরে তিনি খুব খুশি।

আবুল হোসেন বলেন, কখনও কল্পনা করিনি রেললাইন আসবে চকরিয়ায়। জীবনে কখনও রেলে চড়া হয়নি। কত স্বপ্ন দেখেছি রেলে চড়বো। যদি বেঁচে থাকি রেলে চড়বো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেললাইন নির্মাণে কাজ করছেন চীনা কোম্পানীর সাথে দেশিয় কোম্পানী ম্যাক্স কন্সট্রাকশন। ২০১৯ সালের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। আগামী ২০২৩ সালের মে মাসে রেললাইন প্রকল্পের কাজ শেষ করে রেলওয়ের কাছে হস্তান্তর করবে বলে জানান ম্যাক্স কন্সট্রাকশন পার্ট-২ এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মো.ফরহোদ হোসেন।

তিনি বলেন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার রেললাইন তৈরীর কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়ে গেছে এবং ডুয়েল গ্যাজের রেলের বিটও বসানো হয়েছে। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইনে মাতামুহুরী, সাঙ্গু ও বাঁখখালী নদীর উপর ২০টি বড় ব্রীজ তৈরী করা হয়েছে। এছাড়াও ছোট ছোট ১০৮টি কালভার্ট তৈরীর কাজও শেষ।

তিনি আরও বলেন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার এলাকায় চারটি বড় স্টেশন হবে। এছাড়াও ছোট আরও কয়েকটি স্টেশন হবে। এসব স্টেশনের কাজও প্রায় শেষের দিকে। তন্মধ্যে চকরিয়ার ডুলাহাজারায়, ইসলামপুর, রামু ও কক্সবাজার স্টেশনগুলো উল্লেখযোগ্য। আশাকরছি ২০২৩ সালের মধ্যে রেললাইন নির্মাণের কাজ শেষ করে রেলওয়ের কাছে হস্তান্তর করতে পারবো। তারাই নির্ধারণ করবে কখন রেললাইন চালু হবে।

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...