উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯/০৯/২০২২ ১০:০৩ পিএম

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি ও পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলামের সীমান্ত এলাকা ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় ব্যাপক গোলাগুলি। আজ সোমবার তাঁরা নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। তাঁরা সীমান্ত এলাকায় থাকাকালে কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। ডিসি-এসপি সীমান্ত ত্যাগের পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তুমব্রু সীমান্তে শুরু হয় গোলাগুলি।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের কোনারপাড়া শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পূর্ব পাশের পাহাড়েই মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি’র চৌকি। সেই চৌকির পাশে পাহাড়ের নিচেই সেদেশের নিরাপত্তাবাহিনীর শক্ত অবস্থান। সেখান থেকেই মুহূর্মুহু গোলাগুলি ও ভারি অস্ত্রের গোলার শব্দে তুমব্রু সীমান্ত কাঁপছে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত এভাবে চলছিল গোলাগুলি।
সোমবার সকাল থেকে সীমান্তের দুটি পয়েন্টে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয় নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের সীমান্তের ৪৩/৪৪ নম্বর পিলারের ওপারে আসারতলি ও জামছড়ি এলাকায়। সকাল ১১টা পর্যন্ত সেখানে গোলাগুলি ছাড়াও ১১টি মর্টার শেল নিক্ষেপের শব্দ শুনতে পেয়েছেন সীমান্তের বাসিন্দারা। এরপর তুমব্রু সীমান্তে সকাল বেলা একদফা গোলাগুলি হলেও জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের পরিদর্শনকালে কোনো গোলাগুলি হয়নি।

সোমবার সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমমিন পারভিন তিবরিজি ও পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। জেলা প্রশাসক প্রথমে সীমান্ত এলাকার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে সরিয়ে আনা এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র উখিয়ার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালেয় পরিদর্শন করেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি অব্যাহত থাকার প্রেক্ষিতে সীমান্তের বাংলাদেশি যেসব পরিবার ঝুঁকির মুখে রয়েছে, তাদের সরিয়ে নিতে ঝুঁকির পরিস্থিতি ও সীমান্তবাসীদের নিজস্ব মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক প্রস্তুতি হাতে নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি খারাপ হলে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
পরে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে স্থানীয়দের ঝুঁকির বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।

এ সময় জেলা প্রশাসক ইয়াছমমিন পারভিন তিবরিজি বলেন, ‘দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে সরকার। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক নজরদারি রেখেছে। ঝুঁকির মুখে স্থানীয়দের সরিয়ে নিতে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। এই নিয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত রাখা হয়েছে।’

তিনি জানান, সীমান্ত থেকে আপাতত ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যারা তুমব্রু, ঘুমধুম, ফাত্রাঝিরি, সীমান্তের খুব কাছের পরিবার রয়েছে এসব পরিবারগুলো সরানো হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনায় থাকা ৩০০ পরিবারের আশ্রয়ের জন্য স্থান খোঁজা হচ্ছে। সবকিছু গুছিয়ে রাখা হয়েছে।’

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখানকার বাসিন্দারা দীর্ঘকাল ধরেই সীমান্তের এরকম সমস্যার মুখোমুখি হয়ে জীবনধারণ করে আসছে। তাই তাদের জন্য এরকম পরিস্থিতি নতুন কিছু নয়। এ কারণে এখনই লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া যাবে না। সরাতে গেলেও অনেকেই যাবে আবার অনেকেই যাবে না।’

তবে মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রুর দুটি ও ঢেঁকিবুনিয়ার একটি চৌকি বাংলাদেশের সীমানাঘেঁষা স্থানে অবস্থিত হওয়ায় এই তিনটি পয়েন্টের বাসিন্দাদের নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সজাগ রয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান জানান, চৌকির পার্শ্ববর্তী এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়া মাত্রই লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত

চকরিয়ায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের হট্টগোল

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল ...