দেশের পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী, পণ্যবাহী ট্রাক, পর্যটন বাস ও ব্যক্তিগত যানবাহনের চলাচলের কেন্দ্রবিন্দু। অথচ দেশের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কের একাধিক অংশ বর্তমানে “দুর্ঘটনাপ্রবণ মৃত্যু ফাঁদ” হিসেবে পরিচিত। প্রায় প্রতিদিনই এখানে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, যার ফলে প্রাণহানি ও পঙ্গুত্বের ঘটনা ঘটছে।
গত কয়েক বছরে এই মহাসড়কে শত শত মানুষ নিহত এবং হাজারো মানুষ আহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ আছে। দুর্ঘটনার ক্রমবর্ধমান প্রভাবে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। একই সঙ্গে মহাসড়কটি দ্রুত চার বা ছয় লেইনে উন্নীত করার জন্য জনদাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। নাগরিক সমাজ, পরিবহন সংগঠন, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মগুলো ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সমাবেশের মাধ্যমে বিষয়টি সামনে তুলে ধরেছে।
এই প্রেক্ষাপটে কক্সবাজারের সন্তান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাহসিন মোক্তার নিশান মহাসড়কটির প্রশস্তকরণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে উচ্চ আদালতে একটি রীট পিটিশন দায়ের করেন। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিতে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগামী ৪ মাসের মধ্যে মহাসড়কটির নিরাপত্তা ও প্রশস্তকরণ সংক্রান্ত কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা হাইকোর্টে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় রীট আবেদনের পক্ষে শুনানী করেন কক্সবাজারের সন্তান ব্যারিস্টার নওরোজ মোহাম্মদ রাসেল চৌধুরী।
কক্সবাজার কমিউনিটি এলায়েন্স এর সংগঠক মোহিব্বুল মোক্তাদির তানিম বলেন, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও আধুনিকায়নের কাজ দ্রুত শুরু হলে দুর্ঘটনা কমবে এবং যাত্রী ও চালকরা নিরাপদ মহাসড়ক উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া লেইন বৃদ্ধি কেবল দুর্ঘটনা কমাবে না বরং কক্সবাজারের পর্যটন, অর্থনীতি, বাণিজ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের পথও সুগম করবে।
এদিকে ঢাকায় বসবাসরত কক্সবাজারের বাসিন্দাদের সংগঠন ‘কক্সবাজার কমিউনিটি এলায়েন্স’ জনগুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ে হাইকোর্টে রীট দায়ের ও মামলার শুনানীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় আইনজীবী তাহসিন মোক্তার নিশান ও ব্যারিস্টার নওরোজ মোহাম্মদ রাসেল চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।