কক্সবাজারের চকরিয়ায় বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঘুমন্ত অবস্থায় ওসমা মণি (৭) নামে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২০ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডস্থ হালকাকারা মৌলভীরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত শিশু ওসমা ওই এলাকার হালকাকারা এলাকার প্রবাসী উসমানের মেয়ে।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার জানান, হালকাকারা মৌলভীরচর এলাকায় শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বাহাদুর মেস্ত্রির বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গভীর রাতে আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন আগুন নেভাতে। কয়েক মিনিটের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা বসতঘরে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় বাড়িতে সবাই ঘুমন্ত ছিল। বাড়িতে আগুন দেখে ঘুম থেকে জাগ্রত হয় প্রবাসী উসমানের স্ত্রী। আগুন দেখে এসময় তার দুই সন্তান নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। মেয়ে ওসমা মণি তার চাচির সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল অন্য একটি কক্ষে। ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়ে মৃত্যু হয় উসমানের মেয়ে ওসমা মণির। তবে বাহাদুর মেস্ত্রি ও তার অপর ভাইয়েরা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা আলাদা ঘরে থাকায় আগুনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে প্রাণে বেঁচে যায় তাদের।

স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর রেজাউল করিম বলেন, প্রবাসী উসমানের ঘরটি বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি হওয়ায় মুহূর্তেই আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। রান্না ঘরের চুলা থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তফিকুল আলম ও চকরিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী।

অপরদিকে রোববার সকালের দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম এমপি। এসময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে মানবিক সহয়তা হিসেবে নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, কাপড়-চোপড় ও বাড়ির নানা সরঞ্জামাদি দেন। এছাড়া পুড়ে যাওয়া বসতঘরটি দ্রুত মেরামত করে দেওয়ার দায়িত্ব নেন তিনি। ঘটনাস্থলটি পরিদর্শন করেছেন, চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী ও চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী।

ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, কয়েক ঘণ্টা চেষ্টার পরে স্থানীয় জনতা ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় ওসমা মণি নামে এক শিশু আগুনে পুড়ে মারা গেছে। মূলত শিশুটি আরেকটি কক্ষে ছিল। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।