ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৬/০৫/২০২৩ ২:৫৩ পিএম
বঙ্গোসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন

টেকনাফের সেন্টমার্টিনবাসী ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ দিন থেকে খাদ্য সংকটে দিনাতিপাত করছেন। ৩ দিন ধরেই অনেক পরিবারের চুলায় আগুন জ্বলছে না। সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ ও নগদ সহায়তার দিকে ক্ষুদার যন্ত্রণা নিয়ে তাকিয়ে আছে বিধ্বস্ত সেন্টমার্টিনের এসব বাসিন্দা।

মঙ্গলবার (১৬ মে) জেলা প্রশাসন ও বিজিবি ত্রাণ সহায়তার আশ্বাস শুনে সেন্টমার্টিন জেটিঘাটের আশপাশে ঘুরছে হাজারো নারী-পুরুষ। তাদের আকুতি প্রশাসনের লোকজনই যেন ত্রাণগুলো তাদের হাতে হাতে দেয়। ত্রাণ সহায়তায় জনপ্রতিনিধির বন্টনে অনিয়মের আশঙ্কা করছেন তারা।

সেন্টমার্টিন দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল মালেক বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’য় আমারসহ আশেপাশে বসতঘর উড়ে গেছে। টিনের ঘর, মুরগির ফার্ম সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপে ৮০ ভাগ মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের প্রাণহানি না হলেও আর্থিকভাবে প্রায় পঙ্গু হয়ে গেছে। বিশেষ করে যারা দরিদ্র তাদের কিছুই নেই। আর এখানে যে ত্রাণগুলো দেওয়া হবে তা জনপ্রতিনিধিদের হাতে দিলে গরীব পর্যায়ে পৌঁছাবে না। এখানে টিন দেওয়া হবে বলে শুনেছি। প্রশাসন কর্তৃক টিনগুলো দেওয়ার কয়েকদিন পর আসলে দেখা যাবে এসব টিন জায়গা মতো পৌঁছেনি। তাই গরীবদের দাবি, সহায়তার যেন সঠিক ব্যবহার হয়, তবেই সেন্টমার্টিনবাসীর অনেক উপকার হবে। ত্রাণ সামগ্রী ও সহায়তা প্রশাসনের লোকজনদের মাধ্যমে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছানোর অনুরোধ করেন তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’র তাণ্ডবে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩, ৫, ৭, ৮ এবং ৯ ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এসব এলাকায় দরিদ্রতার হারও বেশি। ঢেউটিন সহায়তা দেওয়া হলে টিনগুলো ব্যবহার করার জন্য ঘরের খুঁটিও নেই তাদের। অনেকে ত্রিপল প্লাস্টিকের বেড়া-ছাউনিতে বসবাস করেন। ঝড়ে বাতাসের বেগে সেই শেষ সম্বলও হারিয়েছেন অনেকে।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের জমিলা খাতুন বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে আমাদের গ্রামটি অন্যতম। গেল ৩দিন ধরে ভালো মন্দ খাওয়া তো দূরের কথা, চুলায় আগুনও দিতে পারিনি। শুনেছি আমাদের জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হবে। এসব সহায়তা আমাদের হাতে পৌঁছাবে কিনা সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছি। যদি আমাদের জন্য সত্যি সত্যি কোনো সহায়তা আসে তবে সেগুলো যেন গরীব অসহায় মানুষগুলো পায়। এটাই দাবি আমাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডেইল পাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ তাণ্ডব চালিয়েছে এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে চেয়ারম্যান একটু দেখতেও আসেননি। অথচ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি আমরা। এখন শঙ্কায় আছি ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার জন্য তিনি আসবেন কিনা।

এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’য় কক্সবাজার জেলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হলো টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন। এই দুর্যোগে সরকার সব ধরণের সহায়তা দিবে সেন্টমার্টিনের বাসিন্দাদের। যাদের নগদ সহায়তা দরকার, যাদের গৃহনির্মাণ দরকার, চিকিৎসাসহ যাদের অন্যান্য সহায়তা দরকার সব ধরণের সহায়তা দিবে। পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার থেকে সেন্টমার্টিনে আসা শুরু করবে। সরকারিভাবে প্রশাসন থেকে বিভিন্ন ধরণের সহায়তা পাবে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপবাসী

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...