উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০/০২/২০২৩ ৯:২৩ এএম

বিয়ে মহান আল্লাহর এক বিশেষ নেয়ামত এবং রাসুলুল্লাহ (স.)-এর পবিত্র সুন্নত। ইসলামি শরিয়তে বিয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবকের অভিমত গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে এ বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘অভিভাবক ছাড়া বিয়ে সংঘটিত হয় না।’ (তিরমিজি: ১১০১; আবু দাউদ: ২০৮৩)

বিয়ের আকদ (চুক্তি) করানোর দায়িত্ব মেয়ের অভিভাবককে পালন করতে হয়। যেহেতু আল্লাহ তাআলা বিয়ে দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের প্রতি নির্দেশনা জারী করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যে অবিবাহিত নারী-পুরুষদের বিয়ে দাও।’ (সুরা নুর:৩২) নবী (স.) বলেছেন, ‘যে নারী তার অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিবাহ করবে তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল।’ (তিরমিজি: ১০২১, হাদিসটি সহিহ)

গোপন বিয়ে বা পালিয়ে বিয়ে অসামাজিক ও অকৃতজ্ঞতাপূর্ণ কাজ। এছাড়াও এ ধরণের বিয়েতে রয়েছে বহু বিপত্তি। এজন্য বিয়ের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা ইসলাম পছন্দ করে না। তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, ‘বিয়ে করবে ঘোষণা দিয়ে।’ (মুসনাদে আহমদ: ৪/৫)
এরপরও যদি কেউ অন্যায় লালসায় তাড়িত হয়ে কমপক্ষে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে করেই ফেলে, তাহলে শরিয়তের দৃষ্টিতে বিশেষ বিবেচনায় বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে। কারণ বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার শর্ত হল মুকাল্লাফ (যাদের উপর শরিয়তের বিধান আরোপিত হয়) এমন দুইজন স্বাধীন পুরুষ সাক্ষী বা একজন স্বাধীন পুরুষ ও দুইজন নারী সাক্ষী হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল বলার উভয় বক্তব্য নিজ কানে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। (আদ দুররুল মুখতার: ৩/৯, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২৬৮)

সুতরাং গোপনে বিয়ে হয়ে গেলে বৈবাহিক বন্ধন রক্ষা করা স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই দায়িত্ব। যুক্তিও একই কথা বলে যে, বিয়ে কোনো ছেলেখেলা নয়, বরং এটি নারী-পুরুষের সারা জীবনের পবিত্র বন্ধন। তাই সম্পর্ক ছিন্ন করা বা তালাকের পথে পা বাড়ানো যাবে না।

ইসলামে যৌক্তিক কারণে তালাকের সুযোগ আছে ঠিক, কিন্তু তা খুবই অপছন্দনীয়। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, এতে শয়তান সবচেয়ে বেশি খুশি হয়। আল্লাহর রাসুল (স.) তালাককে ঘৃণা করতেন। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত বৈধ বিষয় হলো তালাক।’ (আবু দাউদ: ২১৭৭)
আরও পড়ুন: হাদিসের আলোকে সর্বোত্তম বিয়ে

বিয়ের পর ছেলের পক্ষে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষী ও গরিব-মিসকিনদের সামর্থ্য অনুযায়ী আপ্যায়নের (ওয়ালিমা) কথাও বলা হয়েছে ইসলামে। আনাস (রা.) বলেন, নবীজি (স.) আবদুর রহমান ইবনে আওফের গায়ে হলুদ রঙের চিহ্ন দেখে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কী? তিনি বললেন, আমি এক খেজুর আঁটির ওজন স্বর্ণ দিয়ে একজন মহিলাকে বিবাহ করেছি। রাসুল (স.) বললেন, ‘আল্লাহ তোমার বিবাহে বরকত দান করুক। একটি ছাগল দ্বারা হলেও তুমি ওয়ালিমা করো।’ (বুখারি: ৫১৫৫; মুসলিম ও মেশকাত: ৩২১০)

মহানবী (স.) নিজেও ওয়ালিমা করেছেন এবং সাহাবিদের করতে বলেছেন। জয়নব বিনতে জাহাশ (রা.)-কে বিয়ে করার পরদিন নবীজি ওয়ালিমা করেছিলেন। (বুখারি: ৫১৭০)। রাসুলুল্লাহ (স.) ছাফিয়াহ (রা.)-কে বিয়ের পর তিন দিন যাবৎ ওয়ালিমা খাইয়েছিলেন। (মুসনাদে আবু ইয়ালা: ৩৮৩৪)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর যুবক-যুবতীদের বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে সুবুদ্ধি ও সঠিক বিবেচনাবোধ দান করুন। একইসঙ্গে অভিভাবকদেরকে সন্তানের বিয়ের বিষয়ে অধিক দায়িত্বশীল হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

পাঠকের মতামত

ঘটনাপ্রবাহঃ ধর্ম

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী

০৯/১০/২০২২
৭:৪০ এএম