কক্সবাজারের উখিয়ায় কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নুরুল আমিন নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আহমদ শরীফ ওরফে শরীফ্যা ডাকাত এবং রেজাউল করিম ওরফে বাবুল নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৫।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে কক্সবাজার র্যাব-১৫ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান।
গ্রেপ্তারকৃত শরীফ জালিয়াপালং ইউনিয়নের পূর্ব নূরারডেইল এলাকার এবং বাবুল রত্নাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম রত্নার বাসিন্দা। শরীফ এই মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি।
র্যাব জানায়, গত ২৩ জুন রাতে পূর্ব নূরারডেইল এলাকায় নুরুল আমিন ও তাঁর ভাই হাসান আলীর বাড়িতে মুখোশধারী ৭-৮ জনের একটি ডাকাত দল হানা দেয়। তারা অস্ত্রের মুখে পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়।
এ সময় নুরুল আমিন ডাকাত দলের সদস্য আহমদ শরীফকে চিনে ফেলায় শরীফ তার বগলের নিচে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে। স্বজনরা গুলিবিদ্ধ নুরুল আমিনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্ত্রী র্যাবকে জানান, তার স্বামী প্রবাসে থাকাকালীন আহমদ শরীফ তাকে কুপ্রস্তাব দিত এবং নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত। এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শরীফ এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, এই ঘটনার জের ধরেই ডাকাতির পরিকল্পনা করা হয় এবং হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ২৪ জুন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর র্যাব আসামিদের ধরতে অভিযান চালায়। বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আহমদ শরীফের বাড়িতে অভিযান চালালে দুজন পালানোর চেষ্টা করে। র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে ধাওয়া করে তাদের গ্রেপ্তার করে। পরে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে চারটি দেশীয় তৈরি লম্বা বন্দুক, এক রাউন্ড গুলি ও একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কুপ্রস্তাবে সাড়া না পাওয়ায় শরীফ ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নিতে হত্যার পরিকল্পনা করে।
র্যাব-১৫ অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান জানান, ঘটনার পেছনের কারণ, অস্ত্র উদ্ধার এবং আসামিদের স্বীকারোক্তির মাধ্যমে এটা স্পষ্ট যে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে