সুজাউদ্দিন রুবেল
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ের টিভি টাওয়ারসংলগ্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এর চারদিকে নিরাপত্তাবেষ্টনী কাঁটাতারের বেড়া। তবে কাঁটাতারের বেড়া কেটেই রোহিঙ্গারা তৈরি করেছে অবাধে যাতায়াতের পথ, ইচ্ছেমতো চলাচল করছেন ওই পথ দিয়ে।
স্থানীয়রা জানান, ক্যাম্প ২ ইস্ট, ব্লক এ। এই ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়ার সঙ্গে রয়েছে একটি গেট। এই গেটের লোহার গ্রিল কেটে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে গাড়িযোগে অবাধে যাত্রা করছে রোহিঙ্গারা।
শুধু এই ক্যাম্প বা এই ব্লকে নয়, অন্য ক্যাম্পগুলোতেও কাঁটাতারের বেড়া কেটে ইচ্ছামতো রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাচ্ছে লোকালয়ে। প্রতিটি গাড়িতেই রোহিঙ্গাদের চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
আশ্রয়শিবিরের প্রবেশদ্বারে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া বন্ধে বসানো হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট। কিন্তু বর্তমানে অনেক চেকপোস্ট তুলে নেওয়া হয়েছে। আর বাকি চেকপোস্টগুলোর শিথিলতার সুযোগে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের নিরাপত্তাবেষ্টনী কাঁটাতারের বেড়া ও লোহার গ্রিল কেটে আশ্রয়শিবির থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। চেকপোস্ট থাকলেও অনেকটি তুলে নেওয়া হয়েছে। আর বাকি চেকপোস্টগুলোর শিথিলতায় রোহিঙ্গাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়া বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়ার দাবি স্থানীয়দের।
তবে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কক্সবাজার উখিয়ার ১৪ এপিবিএনের উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান জানান, আমাদের যে চেকপোস্ট রয়েছে সেখান দিয়ে রোহিঙ্গারা যাচ্ছে না। এখানে প্রায় ২৫০ বাঙালি পরিবার রয়েছে, তারাই যাতায়াত করছে। তবে বিভিন্ন কাঁটাতারের বেড়া কাটা আছে, সেখান থেকে যাতায়াত করতে পারে।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী সালাউদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গারা বেশিদিন বাংলাদেশে থাকার কারণে বিভিন্ন ওলিগলি পথ চিনে গেছে। তারা মেইন রাস্তা দিয়ে আসে না, তারা পাহাড় ও সরু রাস্তা দিয়ে ও কাঁটাতারের নিচে গর্ত করে পালিয়ে আসছে।
উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীর ক্যাম্পগুলো যত দিন ছিল; তত দিন রোহিঙ্গারা এত অবাদে ছড়িয়ে পড়ত না। বেশ কয়েক মাস আগে যেই চেকপোস্টগুল ছিল; সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সেই চেক পোস্টগুলো যদি পুনরায় দেয়া হয় তাহলে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প থেকে বাইরে যাওয়ার প্রবণতা কমে আসবে।
গত কয়েকদিনে ক্যাম্প ছেড়ে পালানোর সময় উখিয়া ও টেকনাফ থেকে ৪৪২ রোহিঙ্গাকে আটকের পর ক্যাম্পে ফেরত পাঠিয়েছে পুলিশ।