কুমিল্লায় নতুন করে ৪ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে যে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে জেলার চান্দিনা-২, হোমনা-১ , মনোহরগঞ্জে একজন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত কুমিল্লায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪ জন।
এদিকে চান্দিনায় করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মচারীর করোনা ভাইরাস পজেটিভ এসেছে।
শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহসানুল হক মিলু।
এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত ৮ কর্মচারীর বাসভবন (একটি ডরমেটরি) সহ মহারং গ্রামের একটি বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা পরিষদে সাধারণ মানুষের যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে। এ ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বপরিবারে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এছাড়া উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের কাশারীখোলা গ্রামের একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী পুরুষ (৬০) জ্বর, কাশি ও শ্বাস-কষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে শুক্রবার (১ মে) দুপুরে মারা যান। স্থানীয়রা খবর পেয়ে লাশ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বাঁধা দেয়।
পরে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. আবুল ফয়সল সহ থানা পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের পর তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পরে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও ছেলের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়।
অপরদিকে চান্দিনা উপজেলা পরিষদ এর একজন কর্মচারী করোনা পজেটিভ হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা, ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে উপজেলায় যাতায়াতকারীরাও আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশীষ দাশ জানান- ওই কর্মচারী উপজেলা চত্বরের ডরমেটরিতে থাকেন। ফলে ৮জন কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের পরিবারসহ ওই ডরমেটরিটি লকডাউন করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা জানান, ওই কর্মচারী আমার অফিসে সার্বক্ষণিক কাজ করতেন। তাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমাকে এবং আমার গাড়ি চালককে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। আমি ওই পরামর্শ অনুযায়ী উপজেলা চত্বরের ইউএনও বাসভবনে হোম কোয়ারেন্টিনে আছি।
তাছাড়া হোমনায় মাসুদ রানা নামের এক ব্র্যাক কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সে উপজেলার দুলালপুর শাখায় ( ক্ষুদ্রঋণ শাখা) কর্মরত । তার বাড়ি গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামে । তার পিতার মো. মোসলেম উদ্দিন ।
জানা গেছে ,মো. মাসুদ রানা গত ৪ এপ্রিল তার গ্রামের বাড়ি থেকে আসার পর থেকে সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাস কষ্ট দেখা দেয় । কিন্তু সে কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে দুলালপুর বাজারের বিভিন্ন ফার্মেসীতে চিকিৎসা করান । অবস্থার অবনতি হলে ৩০ এপ্রিল হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে করোনা সন্দেহে তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠায় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
শনিবার তার নমুনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
তার অবস্থা বেশী ভাল নেই তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে ।
এ ঘটনায় শনিবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাপ্তি চাকমা, হোমনা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল কায়েস আকন্দ এর উপস্থিতিতে ব্র্যাক অফিস( দুলালপুর শাখা) লকডাউন করে লাল নিশান টাঙিয়ে দিয়েছে এবং তার সংর্স্পে থাকা ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে ।