ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১১/০৭/২০২৪ ১০:৩০ এএম

প্যারাবন কেটে চিংড়ি ঘের, ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কক্সবাজারের মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপের প্যারাবন কেটে চিংড়িঘের তৈরির ঘটনায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের পরিদর্শক ফাইজুল কবির বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার মহেশখালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী থানার পরিদর্শক (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী।

মামলায় সাবের আহমেদ, মহসিন আনোয়ার, ওসমান আলী, জসিম উদ্দীন, সাজেদুল করিম, রবিউর আলম, মো. ফারুক, জাহাঙ্গীর আলম, জাফর আলম, মো. তারেক, আমিরুজ্জামান, সাজ্জাদুল করিম, নুরুল আমিন খোকা, মো. ছিদ্দিক রিমন, শাহাদাত কবির, সোনামিয়া, নুরুল আমিন, শহিদুল্লাহ সিকদার, মো. নেজাম, আমির হোসেন, নাসির উদ্দিন, শফি আলম, মো. আলম শরিফ, জয়নাল আহমদ, আমির হোসেন, আজিজুল হকসহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মহেশখালী উপজেলার প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন (ইসিএ) এলাকা সোনাদিয়া দ্বীপের ঘটিভাঙ্গা মৌজার ৫৬২ একর জায়গা গত জানুয়ারি থেকে প্যারাবন কেটে চিংড়িঘের তৈরি করছিল একটি চক্র। তারা প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংস, মাছ এবং অন্যান্য জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতিকারক কার্যাবলি, ভূমি এবং পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্টের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন, যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

জানা গেছে, জানুয়ারি মাস থেকে সোনাদিয়ায় বাংলাদেশ অথনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) আওতাধীন বন কেটে ৪০-৪৫টি চিংড়িঘের তৈরি করে আসছিল প্রভাবশালীরা। দখলদারদের তালিকায় শীর্ষ ব্যক্তিদের নাম উঠে এসেছিল। সেখানে ম্যানগ্রোভ বন কাটার বিষয়টি স্বীকার করেছিলেন উপকূলীয় বন বিভাগ কক্সবাজার অফিসের বন সংরক্ষক শেখ আবুল কালাম আজাদ।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত ১৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৩ হাজার দখলদারকে আসামি করে ৪৮টি মামলা করেছিল বন বিভাগ। উদ্ধার করা হয় দেড় হাজার একর ভূমি।

বন সংরক্ষক শেখ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। দখল করা বনভূমি এবং দখলদারদের তালিকা সংসদীয় কমিটি, মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসনকে পাঠিয়েছিল উপকূলীয় বন সংরক্ষক।

বেসরকারি সংস্থা নেচার কনজার্ভেশন ম্যানেজমেন্টের (নেকম) জেলা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম বলেন, সোনাদিয়ায় প্রতিদিন ৩০-৪০টি স্থানে বন কাটা হচ্ছে, যে কারণে পরিবেশ সংকটাপন্ন। এ অবস্থায় কমে যাচ্ছে ‘চামচটুটো বাটান’ পাখি। শীতকালে সাইবেরীয় অঞ্চল থেকে যে পাখিগুলো আসত, এগুলো কমতে শুরু করেছে। এ ছাড়া বেশকিছু অমেরুদণ্ডী প্রাণী, বিভিন্ন মাছ, কাঁকড়া হুমকির মুখে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল বলেন, মহেশখালী দ্বীপের ম্যানগ্রোভ এবং পাহাড়ি বন কমে গেলে অধিক পরিমাণে তাপমাত্রা বাড়বে, ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য নষ্ট হবে, জীববৈচিত্র্য ও প্রাণী বিলুপ্ত হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. শফীকুল ইসলাম বলেন, একশটিরও বেশি গাছ ম্যানগ্রোভ বাস্তুতন্ত্রে জন্মায়। তার মধ্যে সুন্দরী, গরান, গেওয়া ও কেওড়া অন্যতম। বন বাস্তুতন্ত্রকে স্থিতিশীল করে ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে। রক্ষাকবচ হিসেবে জনবসতিপূর্ণ এলাকার ক্ষতি রোধ করে। চোরাশিকারি, কৃষি, শিল্পের কারণে সৃষ্ট দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন ও ইকোট্যুরিজম এবং আগুন লাগানোসহ অন্য হুমকিগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, বন আদালতে দখলদারদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা চলমান সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। দখলদারদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং বন ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে হবে

পাঠকের মতামত

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বাদী এখন কক্সবাজার দুদকের উপ-পরিচালক

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ...

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...