ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/০৪/২০২৫ ১০:১৩ এএম , আপডেট: ২৭/০৪/২০২৫ ১০:১৩ এএম

শহরের সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশপথের বাম পাশে টিনের ঘেরা দেওয়া সরকারি জায়গায় জোরেশোরে চলছে স্থাপনা নির্মাণের কাজ। বাইরে থেকে বুঝার উপায় নেই ভিতরে কি হচ্ছে।
স্থানীয় সাধারণ লোকজন ও ব্যবসায়ীরা জানান, ইতোমধ্যে সেখানে ৮০-১০০ টি পাকা দোকান ঘর নির্মাণের কাজ শেষের দিকে। প্রতি দোকান থেকে অগ্রিম ১০ লক্ষ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। প্রথম ধাপে ৫ লক্ষ টাকা এবং অবশিষ্ট ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে দোকানে প্রবেশ করার চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি দোকান থেকে ভাড়া বাবদ নেওয়া হচ্ছে মাসিক ২০ হাজার টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশের দক্ষিণ পাশে বিশাল এলাকা টিন দিয়ে ঘেরা। পশ্চিম পাশে কোন প্রাচীর নেই। সুবজ রংয়ের গেইট। যেখানে লেখা আছে ‘এই প্রতিষ্ঠান সি সি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। নিচে লেখা মহামান্য হাইকোর্ট এর আদেশ দ্বারা নিষেধাজ্ঞা আছে। সংরক্ষিত এলাকা, উন্নয়ন কাজ চলিতেছে। বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষেধ।’
এর পাশেই জেলা প্রশাসনের সাইনবোর্ড। লেখা আছে, সতর্কীকরন বিজ্ঞপ্তি। জমির তফসিল মৌজা- ঝিলংজা, বি.এস খতিয়ান নং-১, বি এস দাগ নং- ২০০০৩, জমির পরিমাণ, ২ দশমিক ৩ একর। তার পাশেই আরেকটি সাইনবোর্ডে লেখা আছে নিষেধাজ্ঞার আদেশ, হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং- ১০৬৫৭/২৪। রীটকারী সচ্চিদানন্দ সেন গুপ্ত।
একটি হোটেলের উপরে উঠে দেখা যায়, দোকানের ৫টি লাইন করা হয়েছে। দুই মুখী দোকানের তিনটি লাইন এবং একমূখী দোকানের দু্টি লাইন। একটি দোকানের আয়তন ৮০ স্কয়ার ফুট। মোট ৮০-১০০ টি দোকানের কাজ চলমান। উত্তরে একটি লাইনের দোকানের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শুধু টিন লাগানোর কাজ বাকি আছে। ভিতরে ৭-৮ জন লোক কাজ করছেন। টেবিল চেয়ার বসিয়ে একটি অফিসের মত করা হয়েছে। কথা বলার জন্য বাহির থেকে কয়েকবার ডাক দিলেও কারোই সাড়া পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ২০১৮ সালে এসব জায়গা খাস হয়ে যায়। ২০০০৩ দাগের ২ দশমিক ৩ একর জায়গা ১ নং সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গা। রীটকারী সচ্চিদানন্দ সেন গুপ্তের করা মামলা ( ১০৬৫৭/২৪) তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এর বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ সুপ্রীম কোর্টে আপীল (যার আপিল নং- ৩৭২৯/২৪) দায়ের করলে সরকারের পক্ষের আবেদনে সন্তুষ্ট হয়ে স্থগিতাদেশ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিহ্নিত কিছু দাগী সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক দলের কিছু কথিত নেতা ওই জায়গা দেখভালের দায়িত্বে আছেন। দোকান নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, যিনি রিটকারী তাঁকে কেউ কখনো দেখেননি। যাঁরা তার পক্ষ নিয়ে আদালত পর্যন্ত গেছে তারাও না-কি তাঁকে চোখে দেখেননি। আসলে মানুষটা কি মৃত না জীবিত তার সঠিক তথ্য কেউ দিতে পারেনি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, যে যায়গার কথা তিনি বলছেন, সেই জায়গায় বর্তমান বাজারদর কয়েকশো কোটি টাকা। এত সম্পদের মালিককে কেউ চোখে দেখেনি। মুলত কিছু দখলবাজ নানা ফন্দি করে ওই জায়গায় দখল নিতে চাচ্ছে। ওই লোকটার নামে কোনো খতিয়ান নেই।
জানা যায়, ৫ আগস্টের পর প্রথমে একটি পক্ষ ওই জায়গা দখল করেছিলেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে তাঁদের তাড়িয়ে দেন। পরে সচ্চিদানন্দ সেন গুপ্তের পক্ষে হাইকোর্টের নোটিশ ওঠে ওই জায়গায়। তারা টিনের ঘেরার দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে। ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকার পক্ষ আপিল করলে আদালত স্থগিতাদেশ দেন। এরপর জেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড তুলে দেন। বর্ণিত তফসিলভুক্ত জমি বন ও মন্ত্রণালয়ের ইসিএ (প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা) হিসেবে চিহ্নিত। ফলে উক্ত জমিতে অবৈধ অনুপ্রবেশসহ যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে নেই। আমি খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ও-ই জায়গায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। এই আদেশ থাকা সত্বেও কিভাবে স্থাপনা নির্মাণ হবে। আমি খবর নিয়ে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে বলবো।’দৈনিক, কক্সবাজার

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

ভূয়া ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা, পালংখালী তাজমান হাসপাতালসহ চার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

উখিয়ায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে চার মামলায় ২লাখ ৫৫হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে উপজেলা প্রশাসন। ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...