
আনছার হোসেন, কক্সবাজার::
চারটি সংসদীয় আসন নিয়ে কক্সবাজার জেলা। দেশের সর্বদক্ষিণের এই জেলাটি বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঘাঁটি হিসেবেই দীর্ঘ বছর ধরে পরিচিত। সাধারণত অনিয়ম, প্রতারণা ও ভোট ডাকাতির আশ্রয় না নিলে জেলার চারটি আসনের প্রত্যেকটিতে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা জয়ী হয়ে আসেন। তবে সেটা অবশ্য জোটবদ্ধ নির্বাচনে। এবার কিন্তু সেই চিত্র ভিন্ন। বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা এবার নির্বাচনে আলাদা হয়ে লড়বে। সেই সমীকরণে ভোটের মাঠে আধিপত্য কেবল বিএনপিরই। সাংগঠনিকভাবে জামায়াতে ইসলামী শক্ত অবস্থানে থাকলেও ভোটের মাঠে তার কতটা ছাপ রাখতে পারবে দলটি তা এখন আলোচনায়। যদিও এবার চারটি আসনেই জামায়াতে ইসলামী ভাগ বসাতে চায় বিএনপির ভোটব্যাংকে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কক্সবাজার জেলার চারটি আসনে অনেক প্রবীণ ও নবীন মুখের সম্ভাবনা দেখা গেলেও সবকটি আসনেই মূল লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীদের মধ্যে । এ ছাড়া জুলাই বিপ্লবের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, নেজামে ইসলাম পার্টি কিংবা অন্য কোনো সমমনা দলের নাম থাকলেও ভোটের মাঠে তেমন তৎপরতা নেই।
এদিকে দেশের অন্য জেলাগুলোতে আসনভিত্তিক প্রার্থিতার জন্য অনেক নতুন-পুরোনো মুখ দেখা গেলেও সেখানেও কিছুটা ভিন্ন কক্সবাজারে। এখানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ছাড়া তেমনভাবে বেশি প্রার্থী দেখা যাচ্ছে না। চারটি আসনে এখন পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ জনের নাম শোনা যাচ্ছে।
স্থানীয় নির্বাচন থেকেও ইভিএম বাদস্থানীয় নির্বাচন থেকেও ইভিএম বাদ
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া)
জেলার বৃহত্তর উপজেলা চকরিয়া আর উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়া নিয়ে কক্সবাজার-১ আসন। আসনটিতে রয়েছেন বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং এ মুহূর্তে দলটির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকারের প্রথম মেয়াদের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) থেকে রাজনীতির মাঠে আসা সালাহউদ্দিন আহমেদ এই আসনে একবারের জন্যও হারেননি। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের ১৬ বছর বাদ দিলে তার আগের একটি নির্বাচনেও হারেননি তিনি। রাজনৈতিক মামলাজনিত কারণে তিনি নিজে প্রার্থী হতে না পারলেও এই আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন তারই সহধর্মিণী হাসিনা আহমেদ, তিনিও হারেননি। এসব কারণে আসনটিতে সালাহউদ্দিন আহমেদকে মনে করা হয় ‘অপরাজেয়’। এবারও এই আসনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন সালাহউদ্দিন।
এ আসনে অনেক আগেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির কক্সবাজার শহর শাখার আমির ও সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ আল ফারুককে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে তিনি নিজেও সাংগঠনিকভাবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই আসনটির বিভিন্ন এলাকায় নানা কর্মসূচি পালন করছেন তিনি। জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চকরিয়া-পেকুয়ায় তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। ৫ আগস্টের পর তাদের দলের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। সেই হিসেবে প্রার্থী যত হেভিওয়েটই হোক না কেন, ভোটের মাঠে জেতার জন্য তারা কাজ করে চলেছেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, রাজনীতির মাঠে শেষ বলে কিছু নেই। প্রয়োজন মানুষকে সামনে নিয়ে আসে। জামায়াতে ইসলামীও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চকরিয়া-পেকুয়ায় মানুষের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করতে পেরেছে। বাকিটা সময়ের অপেক্ষা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাকে এখন পুরো দেশকে নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। আমার এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমি প্রতিদিন মাঠে যেতে না পারলেও তারা আমার প্রতি বিশ্বস্ত। আমারও জনগণের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা আছে।’
এসআই নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মীএসআই নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কর্মী
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া)
জেলার দুটি দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়া নিয়ে এই আসনটি জোটবদ্ধ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অতীতে এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে জোটের ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক ছাত্রনেতা এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ। এবারও তিনিই জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী। তিনিও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিয়ে রাজধানীতে ব্যস্ত। প্রতি মাসে মাঝেমধ্যেই তিনি এলাকায় আসেন, ভোটকেন্দ্রিক দলীয় ও ব্যক্তিগত নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এই আসনটিতে জামায়াতে ইসলামীর ভোট রয়েছে। তবে চিরাচরিতভাবেই বিএনপির ভোট বেশি। এর আগে বিএনপি-জামায়াত জোটবদ্ধ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় হামিদুর রহমান আযাদ সহজেই নির্বাচিত হয়েছিলেন, এবার তা হচ্ছে না। বিএনপি এবার জামায়াতকে ছাড় দিচ্ছে না। তাই জামায়াতে ইসলামী সহজেই তরী পার হতে পারবেন না বলেই মনে করেন এলাকার লোকজন।
তবে বিএনপিতে কে প্রার্থী হচ্ছেনÑএ নিয়ে জটিল সমীকরণে পড়েছে দলটি। সময়ে সময়ে এই আসনে সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রার্থী হচ্ছেনÑএমন গুঞ্জনে অনেকের ঘুম হারাম হয়ে যায়। কিন্তু কিছুদিন পর সেই গুঞ্জন থেমে গেলে আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এই আসনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই মাঠে রয়েছেন। তবে এলাকায় একটি প্রচার আছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো নেই। এ নিয়ে মনোনয়ন পেতে জটিলতা হতে পারে।
আসনটিতে বিএনপির আরো বেশ কয়েকজন প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও কার্যত তারা মাঠে কাজ করছেন না। দলের প্রয়োজনে তারা মাঠে নামবেনÑএমনটাই ধারণা বিএনপি নেতাকর্মীদের। এদের মধ্যে সামনের কাতারে আছেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি নুরুল আলম।
এ ছাড়া দ্বীপাঞ্চলের এই আসনে ছাত্রদের নবগঠিত রাজনৈতিক দল এনসিপির প্রার্থী হিসেবে প্রচার রয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও কক্সবাজারের সমন্বয়ক এসএম সুজা উদ্দিনের নাম। তা ছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা ওবাইদুল কাদের নদভী, নেজামে ইসলাম পার্টির কক্সবাজার জেলা শাখার নায়েবে আমির মাওলানা শওকত ওসমান কুতুবী ও এবি পার্টির এনামুল হক সিকদারের নামও শোনা যাচ্ছে। তবে ভোটের মাঠে তাদের কার্যক্রম তেমন নেই বললেই চলে।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও)
ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের আমলে সদর উপজেলা ভেঙে নতুন উপজেলা ঈদগাঁও গঠিত হওয়ায় আসনটিতে এখন তিনটি উপজেলা। এই আসনটি সব সময় বিএনপির ঘরেই থাকে। তবে প্রতিবারই বিএনপিতে প্রার্থিতা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এবারও বোধহয় ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
আওয়ামী সরকারের ১৬ বছর বাদে এই আসনে সর্বশেষ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির লুৎফুর রহমান কাজল। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল এবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে এখানে তার প্রার্থিতায় বাধা হয়ে আছেন আরেক সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান।
অন্য আসনের মতো এই আসনেও বিএনপির ভোট বেশি। কিন্তু জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রম মজবুত। অনেক আগেই এই আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে রেখেছে জামায়াত। এবারের নির্বাচনে তাদের প্রার্থী কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল আলম বাহাদুর। তিনি ভিপি বাহাদুর নামেই বেশি পরিচিত। তিনিও সাংগঠনিক নির্দেশনায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
আসনটিতে এবি পার্টি, নেজামে ইসলাম পার্টির প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। যদিও দল দুটির ভোটের মাঠে তেমন কোনো ভিত্তি নেই। এবি পার্টির প্রার্থী হিসেবে দুজনের নাম রয়েছে মাঠে। এরা হলেনÑএক সময়ের জামায়াত নেতা জাহাঙ্গীর কাসেম ও সাবেক ছাত্রনেতা সরওয়ার সাঈদ। দুজনই এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা। এ ছাড়া বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির কক্সবাজার জেলা শাখার আমির মাওলানা আ হ ম নুরুল আলম হিলালীও এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশী।
কক্সবাজার-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন দলটির জেলা সভাপতি ও রামু চাকমারকুল দারুল উলুম মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আমিরুল ইসলাম মীর।
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ)
দেশের রাজনীতিতে একটি কথা প্রচলিত আছেÑকক্সবাজার-৪ আসনটিতে যে দলের প্রার্থী জয়ী হবেন, সে দলই ক্ষমতার চেয়ারে বসবে। অতীতে অনেকবারই এমন ঘটনা ঘটেছে। সীমান্তের এই আসনটিতে বিএনপির হয়ে দীর্ঘকাল ধরে নির্বাচন করে আসছেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী। তিনি অনেকবার এ আসনে জিতেছেন। অনেকেই মনে করেন, ভোটের খেলায় তিনি পারদর্শী। এবারও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনি। কিন্তু তার জন্য ‘পথের কাঁটা’হয়ে আছেন জেলা বিএনপির অর্থসম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতিতে শাহজাহান চৌধুরীর প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছেন।
শাহজাহান চৌধুরীর ভোটের মাঠে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আলাদা একটি রাজনৈতিক বলয় তৈরি করেছেন। বিশেষ করে টেকনাফ উপজেলায় এ আবদুল্লাহ সবক্ষেত্রে প্রভাব খাটিয়ে যাচ্ছেন। মনোনয়ন দৌড়ে শাহজাহান চৌধুরীর পিছু পিছু ছুটছেন তিনি।
৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর শাহজাহান চৌধুরী ও তার আশপাশের নেতাকর্মীদের কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ড কিছুটা হলেও বেকায়দায় ফেলেছে তাকে। বিশেষ করে তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকর্মীর কারণে তিনি বেশি বিতর্কিত হচ্ছেন। যদিও ভোটের মাঠে বিএনপিতে তার ধারেকাছে কেউ নেই বলেই মনে করেন অনেকে।
আসনটিতে জামায়াতে ইসলামী কখনোই জিততে পারেনি। এখানে হয় বিএনপি জেতে, না হয় আওয়ামী লীগ। কিন্তু এবার জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হচ্ছেন দলটির জেলা আমির মাওলানা নূর আহমেদ আনোয়ারী। বর্তমানে তিনি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তিনি ওই ইউপিতে প্রতিবারই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আসছেন। স্থানীয় একটি মাদরাসার অধ্যক্ষ এবং এলাকায় সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় তিনি। এলাকাবাসী মনে করেন, ‘জোব্বাওয়ালা’ (নূর আনোয়ারী) যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিনই তিনি চেয়ারম্যান হতে থাকবেন।
এদিকে ইউপির এই জনপ্রিয়তাকে তিনি এবার সংসদ নির্বাচনে কাজে লাগাতে চান। জামায়াতে ইসলামী অনেক আগেই তাকে আনুষ্ঠানিক প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছে। তিনি এখন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। উখিয়া-টেকনাফে জামায়াতের দলীয় ভিত্তি মজবুত। কিন্তু শাহজাহান চৌধুরী কিংবা বিএনপির অন্য কোনো প্রার্থীর সঙ্গে তিনি কতটুকু পেরে উঠবেনÑতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংশয় আছে।
এই আসনে এখন পর্যন্ত এনসিপির তেমন কোনো কার্যক্রম নেই। দলটির কোনো মনোনয়নপ্রত্যাশীর নাম এখনো শোনা যায়নি। তবে এবি পার্টি ও নেজামে ইসলাম পার্টির দুজন প্রার্থীর নাম প্রচারে এসেছে। এদের মধ্যে এবি পার্টি থেকে প্রার্থী হতে চান দৈনিক ইনকিলাবের কক্সবাজার অফিস প্রধান ও এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা শামসুল হক শারেক। উখিয়া-টেকনাফে তিনি নিজের উদ্যোগে এবি পার্টির কিছু কার্যক্রম জারি রাখলেও তা উল্লেখ করার মতো কিছু নয়। আর নেজামে ইসলাম পার্টি দাবি করছে, এ আসনে তাদের প্রার্থী দলটির জেলা শাখার নায়েবে আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াছিন হাবিব। এলাকায় তারও তেমন কোনো ভিত্তি নেই। তাছাড়াও তিনি নানাভাবে বিতর্কিত হয়ে আছেন বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে কাজ করছেন। দলীয়ভাবেও আমাদের ভোটের প্রস্তুতি চলছে। প্রতিটি আসনেই একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী কাজ করছেন। কিন্তু দিনশেষে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্যই বিএনপি নেতাকর্মীরা কাজ করবেন। তিনি বলেন, এখনো ভোট নিয়ে মন্তব্য করার চূড়ান্ত সময় আসেনি। আমাদের ভোট নিয়ে দলীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কক্সবাজার জেলা সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম বলেন, জেলার চারটি আসনেই আমাদের প্রার্থীরা কাজ করছেন। সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের জনপ্রিয়তা ও আস্থা বেড়েছে। আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি আরো বলেন, জোটবদ্ধ নির্বাচন না হলেও এলাকায় আমাদের ভালো অবস্থান রয়েছে। আমাদের নেতাকর্মী ও প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। আমরা দিনদিন উন্নতি করছি, জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী।
আবদুর রহমান নামের একজন ভোটার বলেন, বিএনপির ভোটের মাঠ সব সময় ভালো। কিন্তু ৫ আগস্টের পর তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিজেদের ভোট ব্যাংকে নাড়া দিয়েছে। তার মতে, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে সরিয়ে আনা না গেলেও সেটা ভোটের মাঠে প্রভাব ফেলবে।
আবদুর রশিদ নামের আরেক ভোটার বলেন, জামায়াত এখনো নিজস্ব বলয় থেকে বের হতে পারেনি। যদিও ৫ আগস্টের পর তাদের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। মানুষ তাদের ওপর আস্থা রাখতে শুরু করেছে। তিনি মনে করেন, জামায়াতের প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মীরা যদি দলীয় গণ্ডি থেকে বের হয়ে মানুষের দুয়ারে পৌঁছতে পারেন, তাহলে পরিবর্তন আসবে। সুত্র, আমার দেশ
পাঠকের মতামত