উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭/১১/২০২২ ৯:৪৭ এএম

কক্সবাজারের চকরিয়ায় এক অটোরিকশা চালকের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কি হয় ইয়াছিন নামে এক যাত্রীর। সেই ভাড়ার সমস্যা মিটিয়ে গেলেও ওই চালকের উপর ক্ষোভ পুষিয়ে রেখেছিল সেই যুবক। পরে নিজের খাবারের দোকানে ওই অটোরিকশা চালককে বাবা ও ভাইকে নিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে ইয়াছিন।
পরে এ ঘটনায় নিহত চালকের বাবা বাদি হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে ইয়াছিন ও তার ভাই সেখান থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামে আত্মগোপন করে। চট্টগ্রামে এসেও রক্ষা হয়নি; অবস্থান জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরের দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর চিকনদণ্ডী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এর আগে, তাদের বাবা ও মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. ইসহাককে (৫০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার দুই ভাই হলেন— কক্সবাজারের চকরিয়ার নাপিতখালী পাড়া এলাকার মো. ইসহাকের ছেলে ইয়াছিন আরাফাত (২২) ও মো. কাজল (২৪)।

র‌্যাব জানায়, নিহত রাসেল আজম বাহাদুর (৩০) কক্সবাজার জেলার চকরিয়া এলাকার একজন সিএনজি চালক ছিলেন। গত ১৩ অক্টোবর স্থানীয় বদরখালী কলেজপাড়া এলাকার যুবক মো. ইয়াছিন (২০) তার মাকে নিয়ে রাসেলের সিএনজি চালিত অটোরিকশায় চড়ে বদরখালী বাজারে যান। ইয়াছিনের বাবা মোহাম্মদ ইসহাকের বদরখালী বাজারে খাবার হোটেল রয়েছে। বদরখালী বাজারে পৌঁছার পর অটোরিকশা চালক রাসেলের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে ইয়াছিন ও তার মা আছিয়ার ভাড়া নিয়ে বিবাদ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ভাড়া মিটিয়ে দেওয়ার পর ওই অটোরিকশা চালক ইয়াছিনের বাবার হোটেলে গিয়ে খাবার খাওয়ার জন্য যান। সেখানে ইয়াছিন আগের বিষয় নিয়ে আবার তর্কাতর্কি শুরু হয় ওই চালকের সঙ্গে। তর্কের এক পর্যায়ে ইয়াছিন দোকান থেকে ছুরি নিয়ে রাসেলের বুকে আঘাত করেন। এ সময় ইয়াসিনের সহযোগী কাজল এবং অন্যান্য আসামিরাও রাসেলকে এলোপাথাড়ি আঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত জখম অবস্থায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা রাসেলকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

১৬ অক্টোবর এ ঘটনায় চালক রাসেলের বাবা বাদী হয়ে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর আসামি ইয়াছিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।

তবে মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. ইসহাককে (৫০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকী পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালায় র‌্যাব। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি ইয়াছিন ও কাজলের অবস্থান জানতে পারে। গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীর চিকনদণ্ডী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি ইয়াছিন ও মো. কাজলকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করা হলেও দুইভাই চট্টগ্রামে আত্মগোপন করে। পরে তাদের অবস্থান জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা অটোরিকশা চালক রাসেলকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করার দায় স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত