
নুপা আলম
কক্সবাজারে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগির সংখ্যা বাড়ছে ক্রমাগত। আক্রান্তের দিক থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হলেও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগির মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে কোভিড ১৯ বা করোনায় হানা দেয়ায় কক্সবাজার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যা বিভাগের কর্মকর্তা পংকজ পালের দেয়া তথ্য বলছে, কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গা সহ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫০৮ জন। এর মধ্যে স্থানীয় আক্রান্তের সংখ্যা ৩০৩ জন। রোহিঙ্গা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২০৫ জন।
মাসিক পরিসংখ্যান মতে, চলিত জুনের ২৫ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৮৫৬ জন শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩০ জন স্থানীয় আর ৭২৬ জন রোহিঙ্গা। মে মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৪৭ জন, যেখানে ৭৭ জন স্থানীয় এবং ৭৭০ জন রোহিঙ্গা। এপ্রিল মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪২৩ জন, যেখানে ২৮ জন স্থানীয় এবং ৩৯৫ জন রোহিঙ্গা। এছাড়া মার্চ মাসে ৭৭ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ৮৬ জন, জানুয়ারি মাসে ২১৯ জন আক্রান্ত হয়েছিল।
অপরদিকে এই ৬ মাসে কক্সবাজার জেলায় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩১ জন। যেখানে গত ২৫ দিনের আক্রান্তের সংখ্যা ২১৬ জন। এর আগে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৫ মাসে ২১৫ জন আক্রান্ত ছিলেন। গত ২৫ দিনের আক্রান্তের ২১৬ জনের মধ্যে স্থানীয় ১৪২ জন এবং রোহিঙ্গা ৭৬ জন। জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৫ মাসে আক্রান্ত ২১৫ জনের মধ্যে ১০৮ জন স্থানীয় এবং ১০৭ জন রোহিঙ্গা রয়েছে।
ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে কেউ মারা না গেলেও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৫ মাসে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যা বিভাগের কর্মকর্তা পংকজ পাল।
তিনি জানান, ম্যালেরিয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় ১১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জুনের ২৫ দিনে কেউ মারা গেছেন কিনা এটা মাসের শেষে জানা যাবে। এর আগে ম্যালেরিয়ায় ২০২৪ সালে ৫ জন এবং ২০২৩ সালে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়ার প্রকোপের মধ্যে নতুন করে করোনায় হানা দেয়ায় ভাবনার কারণ হয়েছে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগে।
কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যা বিভাগের কর্মকর্তা পংকজ পাল জানিয়েছেন, বর্তমানে কক্সবাজারে ১৬ জন করোনায় আক্রান্ত রয়েছেন। যেখানে ৫ জন স্থানীয় এবং ১১ জন রোহিঙ্গা।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদুল হক জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্ত সকলেই নিজ বাড়িতে রয়েছেন। এর মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় আইসোলেশন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রোগের প্রকোপের অন্যতম কারণ হিসেবে সচেতনার অভাব রয়েছে জানিয়ে সিভিল সার্জন জানান, মুলত পরিচ্ছন্নতার অভাব, যেখানে সেখানে পানি জমে যাওয়া, অপরিচ্ছন্ন নর্দমার কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। আর ম্যালেরিয়া কক্সবাজারে ছিল না। এটা বান্দরবনের পাহাড়ি এলাকা থেকে এসেছে। কক্সবাজার জেলার মানুষের সাথে বান্দরবনের আশা-যাওয়া বেশি। এটার জন্যও খুবই সচেতন হওয়া জরুরি।
এর মধ্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়ে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে কীটনাশকযুক্ত মশারি, প্রচারণা সহ নানা কার্যক্রম চলছে। দৈনিক কক্সবাজার
পাঠকের মতামত