আজিম নিহাদ :
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের ৯ হাজার ফুট উন্নীতকরণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এবার আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমানবন্দরে নির্মিত হচ্ছে ঝিনুক আদলে আর্ন্তজাতিক যাত্রী টার্মিনাল। গত ৫ সেপ্টেম্বর টার্মিনালের আনুষ্ঠানিক নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে রানওয়ের ৯ হাজার ফুট উন্নীতকরণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন ঝিনুকের আদলে আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর টার্মিনাল ভবনের নির্মাণ কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এটি বাস্তবায়নের জন্য নিয়োগ করা হয়েছে ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিডেট (এনডিই) নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। সঙ্গে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানও আছে। সুষ্ঠুভাবে কাজ চলছে আগামী ২০২০ সালের ২৩ মার্চ টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
ঝিনুক আদলে এই আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২৬৫ কোটি ৭০ লাখ ৪১ হাজার টাকা। টার্মিনালটি নির্মিত হলে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা এবং সুপরিসর বিমান পার্কিং সুবিধা তৈরী হবে। এছাড়াও সংযুক্ত হবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস সুবিধা।
প্রকল্প তদারকে নিযুক্ত প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল ভবনে থাকবে একটি বোর্ডিং ব্রিজ, দুটি এসকেলেটর, ৫টি লিফ্ট, ব্যাগেজ হ্যান্ডিলিং সিস্টেম, কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, পিএ সিস্টেম, এফআইডিএস, সিসি টিভি, ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন ইত্যাদি। এছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় একটি নতুন এপ্রোন ও কানেক্টিং ট্যাক্সিওয়ে, কার পার্কিং এরিয়া ও ভিভিআইপি লাউঞ্জ নির্মাণ করা হবে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের বর্তমান ডোমেস্টিক টার্মিনালের পূর্বপাশে নির্মিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল। রোববার বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাটির পরীক্ষাসহ বিভিন্ন কাজ করছে শ্রমিকেরা। টার্মিনালের আধা কিলোমিটার উত্তরপাশে নির্মিত হচ্ছে মালামাল মজুদের গোডাউন।
সেখানে কথা হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এনডিই’র কয়েকজন প্রকৌশলীর সাথে। তারা জানান, কয়েকদিনের মধ্যে মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ হবে। এরপর থেকে টার্মিনাল ভবনের নির্মাণ কাজ পুরোদমে শুরু হবে।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রকল্প পরিচালক মো. আমিনুল হাসিবের পক্ষে উর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী তারেক আহমেদ বলেন, রানওয়ের পর এবার আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এটি শেষ হতে সময় লাগবে ২০২০ সালের মার্চ নাগাদ। এখনো ডিভিউয়ার এবং আইএলস (ইন্সটলেশন ল্যান্ডিং সিস্টেম) দুটি চালু করার প্রক্রিয়া চলছে। কিছু জটিলতা রয়েছে। জটিলতা শেষ হলে শীঘ্রই এ দুটির চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ডিভিউয়ার এবং আইএলএস এর কাজ সম্পন্ন হলে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রূপ পাবে কক্সবাজার বিমানবন্দর। এখান থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রী পরিবহন শুরু হবে।
গত ২০১৫ সালের ২ জুলাই কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ১৯৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা। পরে গত ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বোয়িং ৭৩৭ বিমান যোগে কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরন করেন এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্বোধন করেন।
ইতোমধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিমান সরাসরি কক্সবাজারে অবতরণ করলেও নিয়মিত যাত্রী পরিবহন শুরু হয়নি। আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল, ডিভিউয়ার ও আইএলএসের কাজ সম্পন্ন হলে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে চালু হবে কক্সবাজার বিমানবন্দর।